চট্টগ্রামে লকডাউন মানছেই না

বিশ্বের বহুদেশ করোনা থেকে বাঁচার জন্য দেশব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করেছে। ছোঁয়াছে এ রোগের আবির্ভাবের পর বিশেষজ্ঞরা বার বার বলছেন বাংলাদেশও মহাবিপদের ঝুঁকিতে। এবং সেই ঝুঁকিপূর্ণ সময় এখন চলছে। তাই গত ২৫ মার্চ থেকে সরকার দেশব্যাপী ছুটি ঘোষণা করে এবং সেই ছুটি আরো দুই দফা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরগুলো লকডাউন করেছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে অহেতুক রাস্তায় বের হলেই আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি শারিরীক শাস্তিও নিশ্চিত করেছে। এসব কাজ সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সার্বক্ষণিক রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। তারা প্রতিনিয়ত মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এতোসবের পরও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানছেই না লকডাউন সতর্কতা। কোভিড -১৯ সম্পর্কে একেবারে উদাসীন ও বে-ওয়াকিবহাল আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে দেশের ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া ও প্রিন্টিং মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এমনকি সেনাবাহিনী শক্তি প্রয়োগ করেও জনগণকে বোঝাতে পারছে না। দেশের স্থানীয় প্রশাসনের ইউনিয়ন থেকে সিটিকর্পোরেশন, বিভাগীয় ও জেলাশহর পর্যন্ত দায়িত্বশীলরা পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার-ফেস্টুন এবং মাইকিং করেও সাধারণ মানুষকে ঘরে ঢুকাতে পারছে না। যে-ই বলুক শুনার যেন কেউ নেই এমন অবস্থা। অকারণে শিশু-তরুণ-যুবক-প্রৌঢ় সবাই নানা অজুহাতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছে। রাস্তায় অহেতুক ঘোরাফেরা করছে। দোকানের অংশ খোলা রেখে চা বিক্রি করছে দোকানিরা। সেখানে গাদাগাদি গায়ে গা ঘেঁষে বসে চা খাচ্ছে, গল্প-গুজব করছে।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিসহ বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগের কারণেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। অথচ নগরীর উল্লেখিত স্থানগুলোতে করোনা আক্রান্ত হবার কোন ভয় অধিকাংশ জনগণের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, আমরা জনগণের উদ্দেশ্যে বলি, ঘরে থাকুন। কোন রকম প্রাণে বেঁচে থাকলে চাকুরি, ব্যবসা, দিন মজুরের কাজ সব করে ভবিষ্যৎ পার করা যাবে। করোনায় প্রাণ গেলে দেশময় বিপর্যয় নেমে আসবে। আপনি বাঁচেন, অন্যকেও বাঁচান। বাঁচান দেশ ও জাতিকে। মানুষকে সচেতন করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দেওয়ারও ব্যবস্থা করছি। সিভিল প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও সেনাবাহিনীর দায়িত্বরতদের বিশ্রাম নেই, চোখে গুম নেই। অথচ দেশের মানুষ করোনার ভয়াবহতা বোঝার চেষ্টা করছে না।

সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর রহমান (বিপিএম, পিপিএম) বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরহস্তে সামাজিক ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য নগরবাসিকে উদ্ভ’দ্ধ করে যাচ্ছে। নগরীর কোনো কোনো অংশে মানুষ বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। প্রয়োজনে আমরাও আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন