হোমনায় বিষধর সাপের কামড়ে মো. হানিফ মিয়া (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। মৃত হানিফ মিয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মায়রামপুর গ্রামের মো. জব্বার মিয়ার একমাত্র ছেলে। সে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খোসকান্দি নূরুল ইসলাম কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃতের চাচাত ভাই মো. আল আমিন জানান, গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে শখের বসে হানিফ বাড়ির পাশের সড়কের ধারে চল দিয়ে মাছ ধরতে যায়।
এ সময় সড়কে থাকা একটি বিষধর সাপ হঠাৎ তার পাঁয়ে দংশন করে। পরে তার পাঁয়ে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেধেঁ চিকিৎসার জন্য হোমনা উপজেলার ছয়ফুল্লাহকান্দি গ্রামে মৃত দরবেশ আলীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাকে পান পড়ানো খাওয়ানো হয়। এরপর সেখান থেকে বলা হলো এখন বাঁধ খুলে দেন, রোগীএকটু হাঁটুক। তারপর তাকে বাাড়িতে নিয়ে দুই তিন ঘন্টা ঘুমাতে দেবেন, ঘুম থেকে উঠলেই সুস্থ্য হয়ে যাবে। পরে পান পড়া খাওয়ানো লোকের কথামতো সবই করা হলো। এরপর দেখা গেলো অবস্থা খারাপ। ধীরে ধীরে হানিফের শরীর নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে, তার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে, এরপর রাত দুইটার দিকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুস সালাম সিকদার বলেন, সাপের কামড়ের একজন রোগীকে স্বজনরা রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে আসার আগেই সাপের বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। প্রকাশ, গত ২৫ জুন রাতেও উপজেলার চান্দেচর গ্রামে সাপের কামড়ে রামকৃষ্ণপুর কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র তামিম মারা যায়। তামিমকেও হাসপাতালে না এনে পানপড়া হয়েছিল। এছাড়া গত ২৬ জুন নিরব (১২) নামের এক স্কুল ছাত্রকে সাপে কাটে তাকে হাসপাতালে না এনে পান পড়া খাওয়ানো হয়েছিল। পরে সাপের বিষক্রিয়ায় নিরবও মারা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরো বলেন, শুনেছি সাপে দংশনের পর ঐ রোগীকে এক জায়গায় নিয়ে পানপড়া খাইয়েছে। আমি উপজেলাবাসীকে বলবো এধরণের কোনো রোগী থাকলে তারা যেনো সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কারণ ঝাড় ফুঁক ও পানপড়া কোনোভাবেই বিষধর সাপের বিষমুক্ত করতে পারে না। রোগটিকে যদি স্বজনরা সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে আসতো তাহলে হয়তো যথাযথ চিকিৎসা দিলে বাঁচানো সম্ভব হতো। সাপে কেটেছে রাত আটটায় আর তাকে হাসপাতালে এনেছে রাত আড়াইটায়, তাও মারা যাওয়ার পর।
বার্তা প্রেরক
মোঃ কামাল হোসেন
হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি