ফেনীতে এক ফেরিওয়ালার ছুরিকাঘাতে আরেক ফেরিওয়ালা নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নাম আল আমিন (২৫)। তিনি নওগাঁর মান্দা উপজেলার রাজিন্দ্র বাটি গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। এ সময় আল আমিনকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়ে তার বড় ভাই মো. তোফাজ্জল (২৮) আহত হয়েছে।
এঘটনায় নিহত আল আমিনের চাচা আবু বক্কর বাদী হয়ে অপর ফেরীওয়ালা মো. ডায়মন্ডকে (২৫) আসামী করে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে আসামী ডায়মন্ড পলাতক রয়েছে। আসামী ডায়মন্ডের বাড়ীও নওগাঁর মান্দা উপজেলার রাজিন্দ্র বাটি গ্রামে এবং তারা পরস্পর প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই হয়।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আল আমিনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের মাধ্যমে তার লাশ নওগাঁর গ্রামের বাড়ী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় কলোনীবাসী জানায়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত প্রায় তিনটার দিকে ফেনী পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিজয়সিংহ গ্রামের লুদ্দারপাড় ফরিদ মিয়ার কলোনীর ৩ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত আল আমিন, তার ভাই (আহত) মো. তোফাজ্জল ও হত্যা মামলার আসামী মো. ডায়মন্ড ফেনীতে ওই ফরিদ মিয়ার কলোনীর একই কক্ষে ভাড়া থাকতো। তিনজনই ফেরীওয়ালা। সাইকেলে করে হরেকরকম মালামাল ফেরী করে ফেনী শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতো। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে।
বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে হঠাৎ ডায়মন্ড ছুরি নিয়ে আল আমিনের ওপর হামলা করে এবং উপযুপুরী বুকে ছুরিকাঘাত করে। আল আমিনকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় তার বড় ভাই মো. তোফাজ্জল। ডায়মন্ড তাকেও ছুরিকাঘাত করে। তাদের শোর চিৎকারে কলোনীর অন্য বাসিন্দারা এগিয়ে আসতে দেখে ডায়মন্ড দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আল আমিন ও তোফাজ্জলকে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল আমিনকে মৃত ঘোষনা করেন। মো. তোফাজ্জলকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার অধিবাসী ও ফরিদ মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা মোহাম্মদ সাইফুল জানান, নওগাঁয় নিজ এলাকায় একটি মেয়ের সাথে ডায়মন্ডের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে ওই মেয়ের সাথে ডায়মন্ডের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। ডায়মন্ড এজন্য আল আমিনকে দায়ী করেন। এনিয়ে কিছুদিন আগে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মন কষাকষি হয়। এটাই হত্যাকান্ডের মূল কারন হতে পারে বলে তারা ধারনা করছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ইকবাল হোসেন ভূঁঞা জানান, শুক্রবার ভোরে ছুরিকাঘাতে আহত একজন হাসপাতালে আনার পথেই মারা গেছে। দুপুরে হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহত একজনকে ভর্তির পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরনের জন্য রেফার করা হয়েছে।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন হত্যার ঘটনার মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ময়নাতদন্তের পর লাশ নওগাঁর মান্দা উপজেলায় নিজ গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মো. ডায়মন্ড পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে হত্যার আসল কারন জানা যাবে।
বার্তা প্রেরক
শেখ আশিকুন্নবী সজীব
ফেনী প্রতিনিধি