মাদ্রাসার ছাত্রকে বলাৎকারের পর গলা টিপে হত্যা করলো প্রধান শিক্ষক 

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হোসেন (৯)কে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (বড় হুজুর)মোশারফ হোসেন (৪২)। ওই ছাত্রকে বলাৎকারের পর বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়েই হত্যার পথ বেছে নেন বলে  আদালতকে জানান তিনি।

প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি প্রদানকালে আদালতে স্বীকার করে বলেন, এর আগেও তিনি আরাফাতকে বলাৎকার করেছেন।গত শনিবার(২১ আগস্ট) রাতে বলাৎকারের পর আরাফাত বিষয়টি তার পিতাকে বলে দেবে বলে হুজুরকে জানালে তিনি তখন আরাফাতকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে গলা টিপে তাকে হত্যা করে লাশ মাদ্রাসা সংলগ্ন ডোবায় ফেলে দেন।

 বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.জাকির হোসাইনের আদালতে  দেয়া জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়। মোশারফ হোসেন উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরলক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (র.) নুরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রধান শিক্ষক (বড় হুজুর) । তার বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। নিহত আরাফাত একই মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র এবং  চরমজলিশপুর ইউনিয়নের ছয়আনি গ্রামের নাজের কোম্পানী বাড়ির ফানা উল্লাহর ছেলে।

উল্লেখ যে; গত রোববার (২২ আগস্ট) ভোর ৪টার দিকে সোনাগাজী চরলক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (র.) নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের ছাত্র আরাফাত হোসেন কে হত্যা করে মাদ্রাসা সংলগ্ন দাগনভূঁঞা উপজেলার মাতুভূঁঞা ইউপির মোমারিজপুর গ্রামের একটি ডোবায় লাশ ফেলে দেয়। একই দিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় আরাফাতের পিতা বাদী হয়ে এ ঘটনায় বড় হুজুর সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে বড় হুজুর মোশারফ হোসেন ও আরাফাতের এক সহপাঠিসহ এজাহার নামীয় আরো দুই হুজুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সোমবার (২৩ আগস্ট) গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে  মোশারফ হোসেন কে ৪দিনের, সহকারী শিক্ষক আজিম উদ্দিন ও নুর আলীকে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই সাথে গ্রেপ্তারকৃত জোবায়ের আলম ফাইজ (১১)কে গাজীপুর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণের আদেশ দেওয়া হয়।

দাগনভূঁঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন , ৪দিনের রিমান্ড শেষে প্রধান শিক্ষককে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জুয়েল বলেন, বড় হুজুরকে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। তার স্বীকারোক্তিতে দেয়া তথ্য অসংলগ্ন মনে হলে পূণরায় তাকে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

বার্তা প্রেরক
শেখ আশিকুন্নবী সজীব
ফেনী প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন