প্রায় দ্বিগুন রাজস্ব আদায় ১০ বছরের রের্কড বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে নতুন বছরের জুলাইতেই প্রায় ৩ কোটি ২৩ লক্ষ

২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে লক্ষমাত্রার রেকর্ড ভেঙ্গে প্রায় দ্বিগুন রাজস্ব আদায় করেছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। নতুন অর্থ বছরের প্রথম জুলাই মাসেই আয় করেছে প্রায় ১ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। তবে নতুন অর্থ বছরের লক্ষমাত্রা এখনও নির্ধারন করা হয়নি বলে জানাযায়। করোনা মহামারির মাঝেও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে গত অর্থ বছরে সরকারের বেধে দেয়া লক্ষমাত্রার রেকর্ড ভঙ্গ করে প্রায় দ্বিগুন রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সরকারের রাজস্ব আদায়ে লক্ষ মাত্রা নির্ধারন ছিল ৩৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। লক্ষমাত্রার চেয়ে ৮৩ শতাংশ বেশী লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০ বছরের মধ্যে রেকর্ড করলো বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত নেপাল ও ভুটানের সংযোগ ব্যবসায়িক একটি বন্ধন তৈরী হয়। ভারত নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের গুরুত্ব দিনদিন বাড়ছে সেই সাথে বাড়ছে সরকারের রাজস্বও।

১৯৯৭ সালে ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়। প্রথমে নেপালের সাথে বাংলাদেশের এক বানিজ্য চুক্তির আওতায় পন্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে বন্দরটি শুররু করে। পরবর্তীতে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ভারতের সাথে বাংলাদেশের এ বন্দর দিয়ে পন্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশী আমদানি হয় পাথর। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সংযোগ হয়েছে চাল আমদানির মধ্য দিয়ে।

১৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার চাল আমদানি হওয়ায় সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। বাংলাবান্ধা আমদানি রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন বলেন, ভারত, নেপাল ও ভুটান এর সংযোগ স্থল হল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে অবস্থিত। ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে বন্দরটি অবস্থিত। এটি একটি সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর। ভবিষ্যতে চীনের সাথেও সংযোগ হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।

চীনের সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারিত হলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি হবে বাংলাদেশের সেরা স্থলবন্দর। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল এবং ব্যবসায়ী বান্ধব পরিবেশ হওয়ায় নতুন নতুন ব্যবসায়ীরা যোগ দিচ্ছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে। তিনি আরো বলেন, ভারত থেকে ২২ টি পন্য আমদানির উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে এই স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো সম্প্রসারন ঘটবে এবং সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করতে পারবে।

স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এমন একটি বন্দর যা চারটি দেশের সমন্ময়ের মাধ্যমে পন্য আমদানি রপ্তানীর বিশেষ সুবিধা রয়েছে। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ যদি কাংখিত সেবা প্রদান করেন এবং পন্য আমদানি রপ্তানীর ক্ষেত্রে পাথর ও অন্যান্য পণ্যের লোডিং ও আনলোডিং ভ্যাটসহ আদায় করলেও লোডিং সেবাটি না দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের কাংখিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই লোডিং সেবাটি নিশ্চিত করা হলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হত। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে নিয়ম অনুযায়ী সেবাটি পেলে আমদানি-রপ্তানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহও বৃদ্ধি পাবে।

রাজস্ব কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার মবিন উল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্তের ঝুকি থাকা সত্তেও দেশের রাজস্ব আয় ঠিক রাখার জন্যই যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশী পরিমান পাথর আমদানি হয়ে থাকে। গত অর্থ বছরে প্রচুর পরিমানে চাল আমদানি হয়েছে। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে সরকারের রাজস্ব আদায়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি আরো বেশী ভুমিকা রাখবে।

বার্তা প্রেরক
জাবেদুর রহমান জাবেদ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন