উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা নিতে আসা অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক আজ বুধবার টিকা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভিযোগ কে আগে টিকা নিবে এমন অবস্থায় হুড়োহুড়ি করে টিকা কেন্দ্রের দরজা জানালা ভাংচুর করেছেন টিকা নিতে আসা লোকজন। পরে থানা থেকে পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে।
টিকা না পেয়ে ফিরে যাওয়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম ও আল্ফত বেগম বলেন, টিকা নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে সকাল সকাল রওয়ানা হয়ে হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে এসে তিন ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর সাড়ে এগারটার দিকে টিকা কেন্দ্রের এক লোক হ্যান্ড মাইকে মাইকিং করে বলতেছে আজ আর প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হবে না। যারা প্রথম ডোজের টিকা নিতে এসেছেন তারা বাড়ি চলে যান। আপনাদের মোবাইলে ম্যাসেজ যাবে, কার কোন দিন টিকা দেয়া হবে। ম্যাসেজ অনুযায়ী আবার টিকা নিতে আসবেন। তাদের মতো এমন শত শত লোক টিকা না পেয়ে ক্ষোভে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান তারা।
লোকজনের শরীরে টিকা দানকারী স্বাস্থ্য সহকারি সেলিনা আক্তার জানান, প্রথম ডোজের যে কতগুলো টিকা ছিল সেগুলো আজ সকাল সকালই শেষ হয়ে যায়। এখন শুধু দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম চলামান রয়েছে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. শেখ ফরিদ জানান, আজ বুধবার সকাল থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে লোকজন টিকা কেন্দ্রের সামনে এসে ভিড় করতে থাকেন। পরে তাদেরকে লাইনে দাঁড়িয়ে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে টিকা নেয়ার আহবান জানালে তারা লাইন ধরেন। এভাবে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকা দেয়ার কার্যক্রম চলছিল।
এক পর্যায়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়ে যায়। তখন কোনোভাইবেই তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভয হচ্ছে না। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরকিল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম স্যারকে ফোন করলে স্যার এসেও লোকজনকে সামাল দিতে পারছিলেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার জানান, আজ বুধবার টিকা নিতে টিকা কেন্দ্রে অনেক লোক সমাগম হয়। লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য কর্মীকে এনেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। কার আগে কে টিকা নিবে এমন করতে করতে এক পর্যায়ে হুড়োহুড়ি করে টিকা কেন্দ্রের দরজা ও জানালা ভেঙ্গে ফেলেছে টিকা নিতে আসা লোকজন।
পরে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমারা যে দিন টিকা পাব , সেদিন থেকেই আবার টিকার প্রথম ডোজ দেয়া শুরু করবো। হাসপাতালে টিকা আসা মাত্রমফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেসবুক আইডিসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে লোকজনকে জানিয়ে দেয়া হবে কখন থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। যারা টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কেউ বাদ যাবে না। সবাই টিকা নিতে পারবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। সবাইকে টিকা দেয়া হবে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা কেন্দ্রে আসার আহবান জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, যেখানে আগে করোনা ভাইরাসের টিকা নেয়ার জন্য এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা চালানা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে অনেক বুঝানো হয়েছে, টিকা নেয়ার জন্য লোকজনকে বাপ পর্যন্ত ডাকা হয়েছে। তারপরও মানুষ টিকা নিতে আনীহা ছিল। এখন মাইকিং ছাড়াই মানুষকে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। টিকা নেয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ হয়েছে। এটা অবশ্যই ভাল দিক।
বার্তা প্রেরক
মোঃ কামাল হোসেন
হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি