তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে এখন সবচেয়ে দামি আম সূর্যডিম

তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে এখন সবচেয়ে দামী আম সূর্যডিম। দেশের মধ্যে সূর্যডিম আমের সবচেয়ে বড় বাগানও এখানে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অবঃ) তেঁতুলিয়ার কৃতি সন্তান কাজী মৌসুমী বাবার পৈত্রিক জমিতে শখের বসে ২০১৭ সালে আম বাগান গড়েন। শখের বাগানে প্রথমে তিনি দু‘শটি সূর্য ডিম আমের চারা লাগান। পরে আরো ১ শ’ ৩০ টি চারা লাগানো হয়। বর্তমানে তার বাগানে ৩ শ ৩০ টি সূর্য ডিম আমের গাছ রয়েছে।সরেজমিনে দেখাযায় উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরে কাজীপাড়া গ্রামে সীমান্তের অদুরে সমতল ভূমিতে এই আমের বাগানটি।

বর্তমানে গাছে গাছে ঝুলে আছে সূর্যডিম আম ছাড়াও অরো বিভিন্ন প্রজাতির আম। বর্তমানে ৮ একর জমিতে সূর্যডিম, পিউজাই,বারি ফোর,বানানা এবং রেড পালমা জাতের আম বাগান রয়েছে। ৪’শ থেকে ৫’শ গ্রাম ওজনের এই আম বিক্রী শুরু হয়েছে। যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সৌখিন আম ভক্তরা এই সূর্যডিম আম কিনছেন। বাগান পরিদর্শন করতে যান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা তামান্ন ফেরদৌস, মোখলেছুর রহমান, প্রকৌশলী ডাবলু প্রমূখ।

মেজর (অব) কাজী মৌসুমী‘র বাবা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের নিকটাতিয়ের কাছে এই আমের বর্ণনা শুনার পর ২০১৭ সালে ঢাকা থেকে এই আমের চারা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেন দুই মেয়ে। আমার দুই মেয়ে মেজর (অব) কাজী মৌসুমী এবং কাজী মহুয়া বর্তমানে কানাডা প্রবাসী তারাই মূলত এই আমের বাগান করেছেন। তারা ঢাকা থেকে সূর্যডিম আমের চারা সংগ্রহ করে। আমের ফলন শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে।

এই আম দেশের বিভিন্ন যায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রযুক্তি এবং সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা গেলে তেঁতুলিায়ার সূর্যডিম আম বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব। এখানকার জমিতে আমের প্রচুর ফলন হয়। তিনি শুধু সূর্যডিমই নয় আরও কয়েক প্রকার বিদেশী জাতের আমের চাষ করছেন। প্রত্যেক প্রজাতির আমের ভালো ফলন এসেছে। এ মৌসুমে আরো ৪ একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আমের চারা লাগানো হবে বলে তিনি জানান। অনেকেই এসব প্রজাতির আমের বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

সরকার উদ্যোগ নিলে এই আমের চারা উৎপাদন করে চাষিদের কাছে পৌছে দিতে পারেন । তিনি আরো বলেন, সূর্যডিম মূলতঃ জাপানের প্রজাতি, জাপানের মিয়াজাকি এলাকায় এ আমের প্রথম চাষ হয়। তাই জাপানে এই আম মিয়াজাকি নামে পরিচিত। রেড মেঙ্গো বা এগস অফ সান নামেও এই আম পরিচিত। বাংলাদেশে এই আম সূর্যডিম নামে পরিচিতি পেয়েছে। তবে এখনও এই আমের নাম দেশের অনেকেই জানেন না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কাজী মাহবুবুর রহমানের সূর্যডিম আমের বাগান দেখেছি। প্রচুর ফলন হয়েছে। আমের প্রকৃতি ও স্বাদও ভালো। আমরা মনে করছি এই এলাকায় সূর্যডিম আম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু সূর্যডিম নয় বিদেশী উন্নত জাতের নানা প্রজাতির আম চাষও সম্ভব এই উপজেলার সমতল ভূমিতে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে এসব আম চাষে সবধরনে সহযোগিতা করা হবে।

বার্তা প্রেরক
জাদেুর রহমান জাবেদ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন