কিশোরগঞ্জে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের মানবেতর জীবন

করোনার কারণে আগে থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এখন চলছে লকডাউন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। এর মধ্যে নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের (কেজি) শিক্ষকদের পরিবারে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। কারণ তাদের পরিবার চলে শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায়। অস্বচ্ছল পরিবারের এসব শিক্ষকদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে না আসায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬৬টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে (কেজি) কমপক্ষে ৯০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োজিত রয়েছেন। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের টাকায় শিক্ষকরা বেতন ভাতা পেয়ে থাকেন। তা দিয়ে চলে শিক্ষকদের অস্বচ্ছল পরিবারের ভরণ পোষণ।

কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন। ফলে কোনোদিক থেকেই তারা উপার্জন করতে পারছেন না। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অর্থবিত্ত না থাকলেও সমাজে তারা শিক্ষক হিসেবেই সম্মানীয়। ফলে এখন তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

শনিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কেজি স্কুলে শিক্ষকতা ও প্রাইভেট পড়িয়ে কোনো রকম পরিবারের খরচ সামাল দিচ্ছি। এমনিতেই কেজি স্কুল থেকে ঠিকভাবে বেতন পাই না তার উপর করোনায় লকডাউন। ফলে আর্থিক অস্বচ্ছল শিক্ষকদের পরিবারে অভাব অনাটন চলছে। শিক্ষিত মানুষ চক্ষু লজ্জার ভয়ে কাউকে বলতেও পারছি না আবার সইতেও পারছি না। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষেরা যেন আমাদের কষ্টটা একটু বোঝার চেষ্টা করেন।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার মিলেনিয়াম স্টারস একাডেমী স্কুলের প্রধান শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত) প্রফেসর আব্দুর রউফ জানান, আমাদের কেজি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পায়না। এই দুর্যোগ মুহূর্তে এখনো পর্যন্ত আমাদের শিক্ষকরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের পরিবারে হাহাকার বিরাজ করছে। চলমান দুর্যোগে আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি সহায়তার আবেদন জানাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা বেগম জানান, সরকারী ভাবে এ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সহায়তার কোন নির্দেশনা নেই।নির্দেশনা পেলে সহায়তা করা হবে।

বার্তা প্রেরক
মোঃ লাতিফুল আজম
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন