নরসিংদীর মনোহরদীতে আ’লীগ প্রার্থীর উঠান বৈঠকে মন্ত্রীপুত্রের হামলা, আহত ১২

মনোহরদী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আমিনুর রশিদ সুজনের উঠান বৈঠকে শিল্পমন্ত্রীর ছেলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বর্তমান মেয়র পক্ষের কমপক্ষে ১০-১২জন আহত হয়েছে। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নরসিংদী জেলা জজ কোর্টের পিপি এ্যাডভোকেট মু. ফজলুল হকের প্রাইভেটকার ও ৭-৮টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেছে হামলাকারীরা। বুধবার রাত ১০টায় মনোহরদী হিন্দু পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় স্থানীয় সাংসদ শিল্পমন্ত্রী এড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের একমাত্র ছেলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। মনোহরদী পৌর নির্বাচনে মন্ত্রীপুত্র মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী চারজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন দেন। স্থানীয়ভাবে তারা প্রত্যেকেই মাদকসেবী এবং মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব প্রার্থীদেরকে সমর্থন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আমিনুর রশিদ সুজনকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু মেয়র সুজন উক্ত ৪জন প্রার্থী মাদক কারবারী ও মাদক সেবনের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় সমর্থন দেয়নি। গত বুধবার রাতে আমিনুর রশিদ সুজনের মনোহরদী হিন্দু পাড়ায় পূর্ব নির্ধারিত উঠান বৈঠক শেষ হওয়ার পর শিল্পমন্ত্রীর ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর নেতৃত্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আকষ্মিক মেয়রের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। আকষ্মিক হামলায় মেয়রের সমর্থকরা আতংকিত হয়ে এলোপাতারি দৌড় শুরু করলে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে মেয়রের বড় ভাই মামুনুর রশীদ, ছোট ভাই হাসান রশীদ তন্ময়, সমর্থক বিটন, সাম্মী, সোহেলসহ কমপক্ষে ১০ জনকে কুপিয়ে জখম করে।

এ সময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মু.ফজলুল হকের প্রাইভেটকার ও উঠান বৈঠকে আগত নেতাকর্মীদের ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। পরে মেয়র সমর্থকরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে শিল্পমন্ত্রীর ছেলে প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি ফাঁকা ছোঁড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

এদিকে হামলার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পৌর এলাকার সর্বস্তরের লোকজন মনোহরদী বাসষ্ট্যান্ড অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এসময় বিক্ষোভকারীরা শিল্পমন্ত্রীর ছেলে যুবলীগ নেতা সাদী ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচিসহ পুরো মনোহরদী অবরুদ্ধ করার হুমকী দেওয়া হয়।
এব্যাপারে বর্তমান মেয়র ও নৌকা প্রতীকের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আমিনুর রশিদ সুজন সমকালকে জানান, অবাধ, সুষ্ঠু, ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ হয়েছে তখন মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটায়।

এব্যাপারে শিল্পমন্ত্রী ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার দুটি মোবাইল নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায় (০১৬৭০৫৬০৫৬০, ০১৯৮০৫৪০৪৪১)। এ ব্যাপারে নরসিংদী জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর ও মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মু. ফজলুল হক এর প্রাইভেটকার ভাংচুরের ঘটনা স্বীকার করেছেন এবং মন্ত্রীপুত্র মঞ্জুরুল হাসান সাদি এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে বলেও সমকালকে জানান।

বার্তা প্রেরক
মোঃ নুরুল ইসলাম
নরসিংদী প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন