নওগাঁয় স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নওগাঁয় স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার নাম করে নয় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তিনি সদর উপজেলা বর্ষাইল ইউনিয়নের বাচাড়ীগ্রাম কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সাদ্দাম ইবনে মোস্তফা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাদ্দাম চাকরিও দিচ্ছেন না আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। এখন টাকা নেয়ার কথাও অস্বীকার করছেন তিনি। এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাচাড়ীগ্রাম কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সাদ্দাম ইবনে মোস্তফা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি দেয়ার নাম করে তিনজনের কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা নেন।

টাকা দেন জেলার মহাদেবপুর উপজেলার দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আলা বক্স মণ্ডলের ছেলে আয়েন উদ্দিন মণ্ডল, ধনজইল গ্রামের সাগর হোসেনের স্ত্রী সোহেলী আকতার এবং গনেশপুর গ্রামের বছির উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান। ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে টাকা নিয়ে চাকরি দিতে ব্যর্থ হলে সব টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলেও অঙ্গীকার করেন সাদ্দাম। পরবর্তীতে বাঁধন ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি সংস্থার ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করেন সাদ্দাম। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান দফতর ঢাকার মোহাম্মদপুরে মসজিদ মার্কেটের জহুরী মহল্লার প্রথম তলার ২১৫ নম্বর রুম। কিন্তু পরবর্তীতে তারা কেউ এই নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরিতে নিয়োজিত হতে পারেননি। নিয়োগপত্রগুলো ভুয়া ছিল।

চাকরি না পেয়ে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ, টাকা চাইলে উল্টো হুমকি দেয়া হচ্ছে। পরে বাধ্য হয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আয়েন উদ্দিন মণ্ডল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঁধন ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস লিমিটেডের অর্থায়নে পরিচালিত সেবা (ভলান্টিয়ার সার্ভিস) প্রকল্পের অধীনে জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক, নওগাঁ সদর হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন অফিসে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৯০ জন নারী ও পুরুষকে ৫-১০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগের পর কেউ কেউ ছয়-আট মাস বেতন পান।  এরপর প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বৈধতা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কয়েক মাসের বেতন না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নওগাঁ থেকে অফিস গুটিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী আয়েন উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘গত আড়াই বছর বাড়ির পাশে লক্ষ্মীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি দেয়ার নাম করে সাদ্দাম হোসেন দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন। যে দুজন চাকরিপ্রার্থী টাকা দিয়েছেন তারাও আমার আত্মীয়-স্বজন। টাকা নেয়ার পর থেকে চাকরি দেবে বলে আজকাল করে বিভিন্নভাবে ঘুরাতে থাকেন। একদিন তার বাড়ি গেলে আমাদের দেখে পালিয়ে যান। একটা নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছিল সেটাও ভুয়া। আমরা চাকরি চাই না, টাকা ফেরত চাই।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে সাদ্দাম ইবনে মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এসবের সঙ্গে আমি জড়িত না এবং নিয়োগপত্রে স্বাক্ষরও আমার না।’নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বার্তা প্রেরক
আব্দুল মজিদ মল্লিক
নওগাঁ প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন