ফেনীর চাঁড়িপুরে এক কিশোরীর বাল্য বিবাহ বন্ধ

ফেনীর চাঁড়িপুরে পুলিশের সহায়তায় এক কিশোরীর বাল্য বিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। রোববার (০১ নভেম্বর) দুপুরে ফেনী শহরের ১২নং ওয়ার্ডের মধ্যম চাঁড়িপুর এলাকায় শেখ আহমেদ ও সেলিনা আক্তারের দ্বাদশ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের বাল্য বিবাহ বন্ধ করেছে এক ঘন্টার জন্য দায়িত্ব নেওয়া সেই প্রতীকী উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবা তাবাসসুম ইমা। ফেনী মডেল থানা পুলিশ ও স্বর্ণ

কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন ফেনীর সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 

ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরান হোসেন জানান, মাহবুবা তাবাসসুম ইমার নেতৃত্বে স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের একটি টিম সকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যেয়ে এক কিশোরীর বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য অনুরোধ করে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাঈনুল ইসলাম তাদের ফেনী সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। পরে তারা লিখিত অভিযোগ দিলে ওসির নির্দেশে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে।

 

এসআই ইমরান হোসেন আরো জানান, অভিযানে বাল্য বিবাহের প্রস্তুতি নেওয়া কিশোরীর বাবা শেখ আহমেদ, মা সেলিনা আক্তার নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হন। একই সাথে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে আর বিয়ে দিবেনা মর্মে লিখিত মুচলেকা প্রদান করেন।

 

মাহবুবা তাবাসসুম ইমা জানান, ফেনী সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী তার কাছে অভিযোগ করে ওই ছাত্রীর বাবা, মা ছাত্রীটিকে দ্বিতীয় বার বাল্য বিয়ে দেওয়ার পায়তারা করছে। এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর ছাত্রীটির একবার বিয়ে হলেও সে বিয়ে এক বছরের বেশি সময় টেকেনি। শশুর বাড়ির নির্মম নির্যাতনে প্রায় ৬ মাস পূর্বে ওই ছাত্রীর বিয়েটি ভেঙ্গে যায়। প্রথম বিয়ের ৬মাস না পেরুতে ফের বাবা-মা ছাত্রীর বিয়ের জন্য হন্য হয়ে পাত্র খুঁজে বেরাচ্ছে। যে কোন সময় ছাত্রীটির বিয়ে হয়ে যাবে এই শঙ্কায় ওই ছাত্রীটি বিয়য়টি তাকে অবগত করে।

 

ইমা আরো জানায়, কিশোরীটির জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১১ নভেম্বর ২০০৩। সে অনুযায়ী রোববার পর্যন্ত তার বয়স হয়েছে মাত্র ১৬ বছর ১১ মাস ২২দিন। ইমা আরো বলেন, ফেনীতে বাল্য বিবাহ বন্ধে স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন সোচ্চার রয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও ন্যাশনাল চিল্ড্রেন ট্রান্সফোর্সের (এনসিটিএফ) উদ্যোগে গত ২৮ অক্টোবর এক ঘণ্টার জন্য ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের প্রতীকী চেয়ারম্যান হয়েছিলেন মাহবুবা তাবাসুম ইমা নামের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। দায়িত্ব পেয়ে ফেনীকে বাল্য বিয়ে মুক্ত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন ইমা।

বার্তা প্রেরক
শেখ আশিকুন্নবী সজীব
ফেনী প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন