নরসিংদীর শিবপুরের সাধারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী সহ নানা অভিযোগ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাছিহুল গণি সরকার স্বপনের বিরুদ্ধে পরিষদের এক মহিলা সদস্যসহ অন্য আরেক নারীকে জোড়পূর্বক শ্লীলতাহানি,বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আাত্মসাৎ,একই প্রকল্পের টাকা একাধিকবার উত্তোলন সহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অত্র ইউনিয়নের তিনজন ইউপি সদস্য। এদিকে অত্র ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য নাজনীন সুলতানা গত ২৭ জুলাই তারিখে নরসিংদী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শ্লীলতাহানি ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। নারী ও শিশু মোকাদ্দমা নং ৬৪/২০২০।

লিখিত অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায় সূত্রে জানা যায়,গত ২৭ জুলাই উক্ত পরিষদের মহিলা সদস্য নাজনীন সুলতানা তার নিজের এলাকার নাগরিকত্ব সনদপত্রের কাজে চেয়ারম্যানের কাছে যায়। এসময় চেয়ারম্যান মাছিউল গণি সরকার স্বপন কৌশলে মহিলা ইউপি সদস্যকে তার বিশ্রাম কক্ষে ডেকে নিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষনের চেষ্ঠা করেন। মহিলা সদস্য চেয়ারম্যানের কবল থেকে দৌড়ে পালিয়ে আসেন। পরে ঐদিনই নরসিংদী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উক্ত চেয়ারম্যানকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন উক্ত মহিলা ইউপি সদস্য। এর আগেও উক্ত চেয়ারম্যানের সাথে আরো একটি মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়,শুধু নারী কেলেংকারীই নয় মাছিউল গণি সরকার স্বপন চেয়ারম্যান হবার পর থেকেই জড়িয়ে পড়েন নানা দূর্নিতীতে। এলাকার গরীব নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে ভিজিটি,ভিজিএফ,বয়স্কভাতা,বিধবাভাতা,বিধবা ভাতা,মাতৃত্বকালীন ভাতা,প্রতিবন্ধীভাতা সহ বিভিন্ন ধরনের কার্ড করে দেন। তাছাড়া ১% এর টাকা দিয়ে বারবার একই প্রকল্পের নামে বিল উত্তোলন করেন তিনি,ভাউন্ডারী ওয়াল নির্মানের টাকা আত্মসাৎ,এলজিএসপি,এলআইসি প্রকল্পের টাকা আত্মাসাৎ করেন উক্ত চেয়ারম্যান।

চেয়ারম্যান মাছিউল গণি সরকার স্বপন চার বছর ধরে পরিষদের ইউপি সদস্যদের সম্মানী প্রদান করেননা বলে অভিযোগ করেন একাধিক ইউপি সদস্য। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর কিংবা রেজুলেশন ছাড়াই বিভিন্ন প্রকল্প নামে বেনামে অর্থ উত্তোলন করে উক্ত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি বিএডিসি(সেচ) প্রকল্প হতে বরাদ্ধ নিয়ে এলজিএসপি ও এলআইসি প্রকল্প দ্বারা বিএডিসি প্রকল্পের কাজ শেষ না করে উক্ত প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন।

পরিষদের সদস্য মোঃ মোঃ বাবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের টেক্স আমরা সমস্ত ইউনিয়ন থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে দিয়েছি। কিন্তু এ টাকা চেয়ারম্যান পরিষদের খাতে জমা না দিয়ে নিজের একাউন্টসে জমা করে আত্মসাৎ করেছেন। ইউপি মহিলা সদস্য রাবেয়া আক্তার বলেন,এডিপির কাজ যে কি এটা আমরা জানিনা। তা আমরা চোখেই দেখিনা। আমরা যদি কোন কাজ আনতে যাই তাহলে চেয়ারম্যানকে আলাদা ভাবে টাকা দিতে হয় না দিলে কাজ মিলেনা।

নির্যাতিত মহিলা ইউপি সদস্য নাজনীন সুলতানা বলেন,উক্ত চেয়ারম্যান খারাপ চরিত্রের লোক। আমি ২৭ জুলাই কাগজ পত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর আনতে গেলে সে আমাকে কৌশলে তারা বিশ্রাম কক্ষে নিয়ে জোড় পূর্ভক ধর্ষনের চেষ্ঠা করে। আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছি। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাছিহুল গণি সরকার স্বপন সমকালকে জানান তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি ১০ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেছি। সামনে নির্বাচন। সম্প্রতি একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এবং আমার মান সম্মান নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়ে এরকম মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করছে।

বার্তা প্রেরক
মো: নূরুল ইসলাম
নরসিংদী প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন