গাংনীর মেয়রের কাছ থেকে পাওনা টাকা ফেরত পেতে এবার অমরণ অনশনে পলি

চাকুরি দেওয়ার নামে কয়েক দফায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে এর আগে একদফা অনশন করে শালিসের মাধ্যমে টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও নির্ধারিত দিনে মেয়র আশরাফুল ইসলাম শালিসে হাজির না হওয়ায় ভুক্তোভোগি মৌমিতা আকতার পলির টাকা আদায় অনিশ্চিৎ হয়ে পড়ে।
পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি কথা ছিল, মেয়র যদি প্রমাণ করতে পারে মৌমিতা আকতার পলির টাকা তার স্বামী মমিনুর রহমান স্বাক্ষর করে টাকা নিয়েছে তাহলে মেয়র আশরাফুল ইসলামকে টাকা দেওয়া লাগবেনা।

আর যদি প্রমাণ না করতে পারে তাহলে মৌমিতার দাবিকৃত ১৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তানুযায়ি গত শুক্রবার (২৮ আগষ্ট) ভুক্তোভোগি মৌমিতা আকতার পলির স্বামী তার কর্মস্থল কুমিল্লা থেকে গাংনী আসেন। কিন্তু ঐ দিন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম সালিশে হাজির হতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিষয়টি পলি খাতুন উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেককে জানালে তিনি বলেন সে যদি না বসে তাহলে আমাদের কিছু করার নাই। এমনটি সাংবাদিকদের জানান পলি খাতুন।

গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমানের কাছে গেলেও তিনি কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন বলে জানান পলি।
এদিকে পলি খাতুন সাংবাদিকদের মামলা করা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা গরীব মানুষ মামলা করার টাকা নেই। তাছাড়া মামলা করলেও তার সাথে আমরা পারবনা কারণ সে বলেছে মামলা করলে মাসে ২০ টাকা করে দিয়ে পরিশোধ করব। হত্যা ,গুম, ও চাঁদাবাজির চলমান মামলার আসামী উল্লেখ করে পলি খাতুন আরও জানান, মেয়র একজন ঠকবাজ, প্রতারক উল্লেখ করেন পলি খাতুন। ৩ বছর আগে আমাকে পৌর সভায় ‘সহকারী কর আদায়কারী ’ পদে চাকরী দেয়ার নামে দফায় দফায়  মেয়র  আমার নিকট থেকে নগদ ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছে। পরবর্তীতে হত্যা মামলায় মেয়র জেলহাজতে  থাকাকালীন সময়ে তার স্ত্রী শাহানা খাতুনের ইসলামী ব্যাংক হিসাব নম্বরে বিভিন্ন চেক মারফত ৮ লাখ ১০ হাজার মোট ১৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এখন সে সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে।

এনিয়ে আমরা মেয়রের বিরুদ্ধে গত ২০ আগষ্ট তারিখে অনশন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ ওবাইদুর রহমানের আশ্বাসে অনশন তুলে বাড়ি গেলেও পরবর্তীতে ওসি মহোদয় সালিস মিমাংশা করতে অপারগতা প্রকাশ করায় পলি আবারও অনশনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

পলি জানান, মরন ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই কারণ আমাদের যা সহায় সম্বল ছিল সব ঘুচিয়ে অন্যের কাছ থেকে ধার দেনা করে চাকুরি পাওয়ার আশায় মেয়র আশরাফুল ইসলামের হাতে টাকা দিয়েছি। এখন সে যদি আমাদের টাকা ফেরত না দেয় তাহলে এখানেই আমরা জীবন দেব। পলি ৬ মাসের অন্তঃসত্বা তার অনাগত সন্তানের ক্ষতি হবে জানিয়ে তাকে অনশন ভাঙ্গার পরামর্শ দিলে সে স্থানীয়দের এবং সাংবাদিকদের জানায় আমরা না বাঁচলে আমার সন্তানকে কে দেখবে আমাদের সাথে সেও মরবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন,পলি খাতুনের দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা।আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমি চাকরী দেয়ার নামে তার নিকট থেকে কোন টাকা পয়সা গ্রহন করি নাই।

গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ  ওবাইদুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে গাংনী পৌর সভার মেয়রকে নিয়ে থানায় বসেছিলাম। পরবর্তী তারিখে অজ্ঞাত কারনে মেয়র সালিস মিমাংসা অমান্য করায় তা সম্ভব হয়নি। তবে সমস্যা নিরসনে মেয়রের এগিয়ে আসায় ভাল।

বার্তা প্রেরক
এ সিদ্দিকী শাহীন
মেহেরপুর প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন