হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় থানায় মামলা, অজ্ঞাত ২৫-৩০ জন আসামী

ফেনীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন হাজারীর মাষ্টার পাড়ার বাড়ীতে হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার পর ২৫-৩০ জনের একদল মুখোশধারী কালো কাপড় পরা সন্ত্রাসী তাঁর বসত বাড়ী ও বসত বাড়ীর পাশে মুজিব উদ্যানে ব্যাপক গুলি বর্ষন ও ভাংচুর করে। একই সময় তারা মুজিব উদ্যানের ভেতর প্রবেশ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও মুজিব উদ্যানের চেয়ারগুলি ভাংচুর করে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। পরে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫টি বন্দুকের খোসাসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন। তিনি তখন বাসায় ছিলেন না। ঘটনার পর তিনি ভোরে ঢাকা থেকে বাসায় পৌঁছে উপস্থিত লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্তের অনুরোধ করেন।

ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন হাজারীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে সেটি মামলা হিসেবে থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাটি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম তদন্ত করবেন। ওসি জানান, এ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।প্রসঙ্গত- জয়নাল হাজারী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত শনিবার তাঁর মাষ্টার পাড়ার বাড়ীর পাশে মুজিব উদ্যানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ আহবান করেছিলেন। প্রতিপক্ষের বাধার কারনে সে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি।

গত শনিবার সন্ধ্যায় জয়নাল হাজারী তাঁর বাসভবনের সামনে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, একটি কথিত সিন্ডিকেট দলীয় নাম ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাসহ তাঁর অনুগতদের পথে পথে বাধা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। তাঁর বাসভবনের পাশেই মাইক বাজানো হয়। তিনি হাত মাইক ব্যবহার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা অনুসারীদের ছাড়াও তাঁর ভাইয়ের পরিবারকেও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ জন্য তিনি ফেনীর বর্তমান সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর নাম উল্লেখ না করলেও তাঁর (নিজাম) অনুসারীদের দায়ী করেন।

অপরদিকে গত ৬ আগস্ট ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল এবং সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে তাঁদেরকে খুন করা হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। ১৫ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম জয়নাল হাজারীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, একটি মহল শান্ত ফেনীকে আবার অশান্ত করার পায়তারা করছে। কিন্তু শান্ত ফেনীকে আর অশান্ত করতে কাউকে দেওয়া হবেনা।

সাবেক সাংসদ জয়নাল হাজারীর অনুসারী ও জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক এম আজহারুল হক আরজু জানান, তিনি (জয়নাল হাজারী)  শুক্র ও শনিবার দুই দিন ফেনীর নিজ বাড়ীতে অবস্থান করে রোববার ভোরে ঢাকা চলে গেছেন।

বার্তা প্রেরক
শেখ আশিকুন্নবী সজীব
ফেনী প্রতিনিধি

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন