দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মানুষ জিন্নাত আলী আর নেই

দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মানুষ জিন্নাত আলী (২৫) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘকায় ব্যক্তি। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ভোর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

জিন্নাতের বড় ভাই ইলিয়াছ আলী মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জিন্নাত আলী ব্রেইন টিউমার নিয়ে চমেক হাসপাতালে নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ার বড়বিল গ্রামের কৃষক আমীর হামজার ছেলে জিন্নাত আলীর উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ২ ইঞ্চি। তিনিই দেশের সবচেয়ে বেশি লম্বা মানুষ ছিলেন।

জিন্নাত আলীর শারীরিক গঠন তার অন্য এক ভাই ও বোনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। ১১ বছর বয়স থেকে তার দ্রুত উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রতিবছর ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে তার উচ্চতা বাড়ত বাড়তে তা ৮ ফুট ২ ইঞ্চিতে এসে থামে। এ উচ্চতা নিয়ে জিন্নাত ও তার পরিবার বিড়ম্বনায় ভুগতেন।

২০১৮ সালে তাকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তখন দেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ হিসেবে তার কথা জানা যায়।

ওই বছরের অক্টোবর মাসে এক সন্ধ্যায় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন জিন্নাত আলী। তাকে সংসদ ভবনে নিয়ে যান কক্সবাজার-৩ (রামু-সদর) আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল। এ সময় অসুস্থ জিন্নাত আলীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তাকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিন্নাতের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেন। এ ছাড়া তাকে একখণ্ড জমি, জমিতে তৈরি একটি পাকা দোকান ও মালামাল কেনার টাকা দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য জিন্নাত আলীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। বিএসএমএমসইউ’র মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহর অধীনে চিকিৎসা নিয়েছিলেন জিন্নাত আলী। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, জিন্নাতের মস্তিষ্কে টিউমার হয়েছে। আর জিন্নাতের হরমোন সমস্যার কারণে তার উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন