মাদারীপুরে নমুনা পরীক্ষায় ২২ জনের করোনা উপস্থিতি নেই, অবরুদ্ধ শিবচর

মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগ মাদারীপুর জেলা থেকে প্রেরিত নমুনার ২৩ জনের রিপোর্ট পেয়েছে এর মধ্যে ২২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আর একজনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসছে, যার তথ্য রবিবার (৫ এপ্রিল) আইইডিসিআর এর প্রেসব্রিফিং এ জানানো হয়ে থাকে। এছাড়া প্রশাসন শিবচর উপজেলার সাথে জেলার যাতায়াতের সমস্ত পথ সোমবার (৬ এপ্রিল) থেকে বন্ধ করে দিয়েছে।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ মীর রিয়াজ আহমেদ জানান, মাদারীপুর জেলা থেকে গত কয়েকদিনে যাদের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রেরণ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে ২৩ জন ব্যক্তির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২ জন ব্যক্তির শরীরের করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বাকি একজনের করোনা ভাইরাস পজেটিভ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন কোন ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়নি। বর্তমানে মাদারীপুরে হোম কোয়ারেন্টে আছেন ১৮৪ জন। আইসোলেশনে আছে ৪ জন। এছাড়া ৫৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে।

এদিকে, সোমবার থেকে শিবচর উপজেলার সাথে জেলার যাতায়াতের সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়ে থাকে প্রশাসন। এর ফলে অঘোষিতভাবে লকডাউন করা হলো পুরো শিবচর উপজেলাকে। এছাড়া আইইডিসিআর যেসকল জেলা ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্লাস্টার ঘোষণা করেছে তার মধ্যে মাদারীপুর জেলা রয়েছে। পাশাপাশি গতকাল রবিবার থেকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
মাদারীপুর জেলায় প্রয়োজনীয় দোকান-পাট ছাড়া সমস্ত দোকান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যায় ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ফার্মেসী ছাড়া সমস্ত দোকান বন্ধেরও নির্দেশনা দিয়েছে। শহরের মানুষ উল্লেখযোগ্যহারে ঘরবন্দী থাকলেও এখনও ঘরে ফেরানো যাচ্ছেনা গ্রামের সাধারণ মানুষদের।

অপরদিকে, গতকাল থেকে মাদারীপুর সদরে খোলা বাজারে ১০ টাকা দরে চাউল বিক্রির কারণে ওএমএস’এর দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে প্রচুর মানুষের সমাগম। সরেজমিনে দেখা যায়, সুমন হোটেলের পরিত্যক্ত ফুড অফিস ভবন, কুলপদ্বি ও খাগদী এলাকার ওএমএস দোকানগুলোতে সাধারণ মানুষ চাল ও আটা কেনার জন্য ভীড় করে থাকে। সবাই ঝুঁকিপূর্ণভাবে চাল ও আটা সংগ্রহ করছেন করোনার কোন প্রকার নির্দেশনা না মেনেই।
জেলা প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি পর্যায় ত্রাণ বিতরণ করছে। এসময় করোনার নির্দেশনা না মেনেই অনেক ক্ষেত্রে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন মাদারীপুর জেলাটি করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্তে¡ও খোলা বাজারে চাল ও আটা ক্রয়, অকারণের শহরে ঘোরাঘুরি, গ্রামের মানুষের অসচেতনতা ও ত্রাণ বিতরণে করোনার নির্দেশনা না মানার মতো অসচেতনতার ফলে আরো বেশি করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটতে পারে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন