করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সচেতন করলেও ঠাকুরগাঁওয়ের ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের কাজ করাচ্ছেন। তবে ইটভাটা কর্তৃপক্ষের দাবি, শ্রমিকদেরই চাপেই ইট প্রস্তুত করতে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে দূরত্ব বজায় রাখা না হলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে। আর প্রশাসন বলছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ইটভাটা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলকারখানা না থাকায় উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের শ্রমজীবীরা অনেকটাই অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে দিন পার করে। তার উপর করোনা ভাইরাস আতঙ্কে জেলার খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছে চরম বিপাকে। ওষুধ আর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া সব অফিস, প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। এমন বাস্তবতায় ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের উপর দায় চাপিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আর শ্রমিকরাও অসচেতন হয়ে সংসারের চাকা ঘুরাতে কাজ করছেন এসব ইটভাটায়। আর দূর-দূরান্ত থেকে আসা শ্রমিকদের কাজে নিয়োজিত করায় আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয়রা।
ইটভাটার শ্রমিকরা বলেন, একদিন কাজ না করলে ভাত জোটে না। করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমি কিছুই বুঝি না।
দূরত্ব বজায় না রাখলে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রকিবুল আলম বলেন, কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা সম্ভব হয় না। সে সব প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।
আর জেলার শীর্ষ স্বাস্হ্য কর্মকর্তা জানালেন, যেখানে জনসমাগম সেখানে এই ভাইরাসটি ছড়ানোর ভয় সবচে বেশি।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, যেখানেই গ্যাদারিং হয় সেখানেই করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা থেকেই যায়। আমরা আসলেই জানি না ভাইরাসটি কার ভিতরে আছে।
প্রশাসন বলছে, বন্ধ করা না হলে, প্রয়োজনে ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ঠাকুগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরাকরি নির্দেশনা মতে এখন কোনো ইটভাটা চলবে না। ইটভাটাগুলো জরুরি সেবা নয়। এটা যদি কেউ চালু রাখে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবো।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। প্রতিটি ইটভাটায় বর্তমানে প্রতিদিন অর্ধশত শ্রমিক কাজ করছেন।