চট্টগ্রামে ইপিজেডের অর্ধশতাধিক কারখানা লে অফে

ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি মহামারী আকার ধারণ করায় কার্যাদেশ স্থগিত, কাঁচামাল সংকট, শিপমেন্ট না হওয়ার কারণে চট্টগ্রামের দুই ইপিজেডের অর্ধশতাধিক কারখানা লে অফ ঘোষণা করছে।

নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সংকট তুলে ধরে বেপজার কাছে সিইপিজেডের ৪৬টি এবং কর্ণফুলী ইপিজেডের ২৩টি কারখানা বিভিন্ন মেয়াদে আবেদন করেছে। বেশ কিছু কারখানা প্রাথমিক অনুমোদনও পেয়েছে।

সিইপজেডের একজন কারখানা মালিক বাংলানিউজকে বলেন, করোনার গ্রাসে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে শতভাগ রফতানিমুখী অনেক কারখানার। ইপিজেড আইনে আছে আপদকালে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী বা কাঁচামাল সংকটে শ্রমিককে কাজ দিতে অক্ষম হলে ১০ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত এক নোটিশে লে অফ ঘোষণা করা যাবে। এরপর প্রয়োজনে আরও ১৫ দিন বাড়ানো যাবে। এ সময় নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকরা চাকরি হারাবে না, নিয়ম অনুযায়ী বেতন ও সুযোগ সুবিধা পাবেন।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাকে কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকায় করোনায় লাখো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লকডাউনে সব শোরুম বন্ধ। প্রতিদিন বায়াররা অর্ডার বাতিলের বার্তা পাঠাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের দুই ইপিজেডে লে অফ চাওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক, জুতা, তাঁবু, ফেব্রিক্স, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী তৈরির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সিইপিজেডে ১৫৮টি দেশি-বিদেশি কারখানায় দুই লক্ষাধিক এবং কর্ণফু্লী ইপিজেডে ৪১টি কারখানায় ৭৫ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করে।

সিইপিজেডের দায়িত্বে থাকা বেপজার মহাব্যবস্থাপক খুরশীদ আলম বলেন, সিইপিজেডের বেশ কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ নানা সংকট দেখিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে লে অফ ঘোষণার আবেদন জানিয়েছে। ১৫, ২০, ৩০, ৪৫ দিনের আবেদন করেছে। একেক কারখানার একেক সমস্যা। কোনো বায়ার কারখানাকে বার্তা দিয়েছে শিপমেন্ট বা তৈরি পণ্য জাহাজে তোলা বন্ধ রাখার। কোনোটি বলেছে অনগোয়িং অর্ডার বাতিল। কিছু কারখানায় কাঁচামাল আছে কিন্তু বায়ার বলেছে ফেব্রিক্স কাটিং বন্ধ রাখতে। একদিকে এসব কারখানায় একদিকে কাজ নেই অন্যদিকে দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

ইপিজেডের অনেক কারখানা লে অফের ঘোষণায় উদ্বেগ জানিয়েছেন শ্রমিকনেতারা। তারা আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন ও সুযোগ সুবিধা আদায়ে বেপজা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেপজার মহাব্যবস্থাপক বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা যাতে কারখানাগুলো পরিশোধ করে সে ব্যাপারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন