নিখোঁজ ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান রংপুরে তার শ্বশুরের বাসায় ফিরেছেন। শুক্রবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে উদ্ধার করা হয়েছে নাকি তিনি ফিরে এসেছেন, তা এখন বলা যাচ্ছে না। তাকে এখন থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
রংপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের সঙ্গে নিখোঁজ অন্য তিনজনও বাড়ি ফিরেছেন। তাদেরও থানায় আনা হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত এই বক্তা গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ৩১ বছর বয়সী এই বক্তা নিখোঁজের পর থেকে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছিল, আদনানের গাড়িচালক আমির উদ্দীন এবং তার সঙ্গে থাকা আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ নামে দুজনও নিখোঁজ হন ওইদিন। ওই রাতের পর থেকে তাদের সবার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরের দিন তার মা আজেদা বেগম রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় জিডি করেন। রংপুরে ওয়াজ মাহফিল শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ ছিল। আবু ত্ব-হার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, গাবতলী থেকে তারা নিখোঁজ হন।
আদনানের মা আজেদা বেগম ও তার এলাকার লোকজনর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন আদনান। একসময় রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে সবার পরিচিত ছিলেন তিনি। রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের গন্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। অনার্সে তার বিষয় ছিল ফিলোসফি। মাস্টার্সে ফিলোসফিতে ফার্স্টক্লাস পান তিনি। অনার্সে পাড়াকালীন ধর্মের দিকে ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়েন এই ক্রিকেটার। সদাহাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক ছিলেন আদনান। তার বাবা মারা যাওয়ার পরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে নানার বাড়িতে বড় হন তিনি। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো আরবি প্রতিষ্ঠানে না পড়লেও ইসলাম ধর্মের প্রচুর বই পড়তেন এবং গবেষণা করতেন। ফিলোসফিতে মাস্টার্স করা ছাত্র অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন একজন ভালো ইসলামি বক্তা। তিনি ধর্মীয় উগ্রবাদকে সমর্থন করতেন না।