কবিতাঃপথের সমাধি

একটা পথ চেয়েছিলাম পথের কাছে,

যে পথটা এঁকেবেঁকে, দুক্রোশ মেঠো পথের আল ধরে,

একটা ঝুম গ্রামের শিব তলার উলুধ্বনিতে মিলে যাবে।

হয়তোবা সে পথ? জলের বুক চিরে, ক্রমশ উঁচু হয়ে,

ঘনকালো মেঘের দেশে খেলা করবে।

কখনোবা সে পথে, সাঁতরে আসবে শেয়াল,

গলা ঝেরে উঁকি দিবে পাতিহাঁসের নিশানায়।

তাই বুঝি সে পথে আজ বৃষ্টি নামবে অঝোরে,

আকাশে ডাং ফুর্তি খেলে যাবে বিজলি রাণীর ডানপিটে ছেলেমেয়ের দল,

হলুদ ব্যঙ লাফিয়ে হিসি দেবে,

আমার শীতে কাঁপা বা পায়ে। আবার গর্জন!

জলের স্রোতে দানবের আর্তনাদ!

কৃষ্ণকলি রাতে একলা পথিক আমি হেঁটে যায় দক্ষিণ থেকে উত্তরে।

এ পথ? এ পথ দানবের পথ,

এ পথ হারিয়ে যাবে আজ মেঘের দেশে, নাকি এ পথ?

এ পথ পথ হারাবে সে পথের তৃষিত গহ্বরে ?

এ পথ পথ হারানোর নীল ব্যথায় !

বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় চোখের নোনা জল।

এ পথ আর পথ হবেনা,

পথের মাটিতে নিদারুণ ক্ষয়ের ছাপ,

অর্জুন গাছের তুলে ফেলা সবুজ চামড়ার মতই,

দগদগে ঘায়ের রঙ ধরে বিধস্ত পথে।

এ পথের পলি মাটির প্রলেপে গৃহবধূ মাটির দোচালা ঘর রাঙায়।

তাই এ পথ আজ হারিয়ে যাবে কোন ক্ষণে ,

নাটোরের চলন বিলে সমাধির লালসালু হয়ে রবে।

অতঃপর অন্য পৃথিবীর কোন পথ এসে সে পথে,

সুবাসিত ধুপ জ্বালাবে কোন প্রিয় সখি,

প্রদীপের সোনালী আলোর আভায়,

স্বীয় ছায়ায় চমকে উঠবে সে,

বাতাসের কানে কানে শুধাবে চুপিচুপি তখন ,

এটাই কি তার হারিয়ে ফেলা সেই পথিকের সমাধি।

কলমেঃপ্রতাপ কুমার

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন