আমাদের গ্রামের বাড়িতে কত প্রকারের শাক খাওয়া হত না! হা হা হা।। তবে কচুশাক মনে হয় এমন একটা শাক যা প্রাচীন আমল থেকে খাওয়া হত। আমরা বছরে শীত কালে মাস খানেকের জন্য গ্রামে গেলেও দেখতাম, অনেক শাক খাওয়া হত না। তবে তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিল কুমড়া শাক! গ্রামের লোকেরা তখন সবে মাত্র লাউ শাক খাওয়া শিখেছে! পুকুরের সদ্য ধরা/তাজা খলিশা বা শোল মাছ দিয়ে লাউ শাক সামান্য ঝোল রেখে রান্না করতে আমার দাদুকে দেখেছি। ছোট বেলার স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে। লাউ কুমড়ার মাছায় লাউ কুমড়া ঘরে থাকত এবং সেটাই খাওয়া হত।
পরিমান ও উপকরনঃ
– হাফ কেজি বা তার বেশি কুমড়া শাক (কচি/মাঝারি হলে ভাল, বাত্তি শাক নয়)
– যে কোন মাছ কয়েক টুকরা (আমরা তেলাপিয়ার কয়েক টুকরা দিয়ে রান্না করেছি, এদিকে আবার মাছ না দিয়েও এই রান্না করতে পারেন, তাতেও স্বাদ হবে, খাওয়া যাবে।)
– পেঁয়াজ কুচি মাঝারি দুইটা
– রসুন বাটা এক টেবিল চামচ
– মরিচ গুড়া, ঝাল বুঝে হাফ চামচ
– হলুদ গুড়া, হাফ চা চামচ
– কাচা মরিচ, কয়েকটা
– লবন/তেল/পানি, পরিমান মত
প্রস্তুত প্রনালীঃ
শাক ভাল করে পরিস্কার করে এভাবে ছোট ছোট পিস করে ধুয়ে রাখুন।
এবার কড়াইতে সামান্য কয়েক চামচ তেল দিয়ে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুচি ভেজে নিন। পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে তাতে রসুন বাটা দিন। এবং ভাল করে ভাজুন।
ভাজা হয়ে গেলে হাফ কাপ পানি দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন। চুলায় আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে।
এবার মরিচ, হলুদ গুড়া দিয়ে দিন।
ভাল করে জ্বাল দিয়ে তেল উঠিয়ে নিন। ফাঁকে কয়েকটা কাচা/পাকা মরিচ দিন।
তেল উঠে গেলে মাছ দিয়ে দিন। যে কোন জিওল মাছ বা অন্য যে কোন মাছ দিতে পারেন। রুই, কাতলা সহ যে কোন মাছই চলবে। তবে পরিমান দুই/তিন টুকরার বেশী নয়। কিংবা মাছের মাথাও দিতে পারেন। আবার মাছ না থাকলে নাই। মাছ ছাড়াও চলবে। স্বাদের সামান্য পরিবর্তন হবে মাত্র। আমরা তেলাপিয়া মাছ দিয়েছিলাম।
মাছ নরম হয়ে গেলে শাক দিয়ে দিন এবং একটা ঢাকনা দিয়ে মিনিট ১০ এর জন্য ঢেকে দিন।
শাক নরম হয়ে এই অবস্থায় এসে পড়বে। মাঝে মাঝে ঢাকনা তুলে নাড়িয়ে দিতে ভুলবেন না। নুতন করে পানি দেয়ার প্রয়োজন সাধারণত হয় না, যদি কম মনে হয় তবে দিতে পারেন।
এবার ফাইন্যাল লবন দেখুন। লাগলে দিন।
সামান্য ঝোল রাখতে পারেন, ইচ্ছা হলে কমিয়ে নিতেও পারেন। তবে শাকের দিকে খেয়াল রাখবেন, কিছুতেই যেন বেশি গলে না যায়।
ফাইন্যাল প্রোডাক্ট।
গরম ভাতের সাথে বসে পড়ুন। দেখুন এবং খাবারের মজা নিন।
যে কোন শাকই এভাবে রান্না করে ফেলা যেতে পারে। মোটামুটি কায়দাটা একই। মাছ বদলে কয়েকটা আলু কেটেও দিতে পারেন। চলবে না দৌড়াবে!