ইউসিবি কর্মীদের বেতন কমাবে না

ব্যয় কমাতে দ্য সিটি, এক্সিম, আল-আরাফাহ্ ও এবি ব্যাংকের পথে হাঁটবে না বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। কোনোভাবেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। কর্মীদের উদ্দেশে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো সেই চিঠিতে বলা হয়, কভিড-১৯ মহামারীর সংকট মোকাবেলার জন্য আমাদেরও বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। তবে তা কোনোভাবেই ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা কমিয়ে নয়। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, ইউসিবির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোনো রকম বেতন কমানো হবে না।

প্রসঙ্গত, ৪০ হাজার টাকার বেশি বেতন-ভাতা পান এমন কর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কমানোর সুপারিশ করে সম্প্রতি দেশের সব বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। চিঠিতে কর্মীদের পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট, ইনসেন্টিভ বোনাস বন্ধ করাসহ ১৩ দফা সুপারিশ করা হয়।

যদিও এ চিঠি দেয়ার আগেই কর্মীদের বেতন-ভাতার ১০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় দ্য সিটি ব্যাংক। একই সঙ্গে কর্মীদের পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট ও ইনসেন্টিভ বোনাস বন্ধের সিদ্ধান্তও নেয় ব্যাংকটি। তারও আগে গত মে মাসের মাঝামাঝিতে কর্মীদের বেতন-ভাতা ৩ ও ৫ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় এবি ব্যাংক।

বিএবি থেকে চিঠি দেয়ার একদিন পরই কর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কর্তন, পদোন্নতি ও ইনক্রিমেন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় এক্সিম ব্যাংক পর্ষদ। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কর্মীদের বেতন-ভাতা ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। আর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরমান আর চৌধুরীর বেতন-ভাতা ১৩ লাখ থেকে কমিয়ে ৮ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

তবে এর মধ্যেই বেতন-ভাতা না কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে এবার বেতন-ভাতা না কমানোর তালিকায় যুক্ত হলো ইউসিবির নাম।

পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে ইউসিবির চেয়ারম্যান কর্মকর্তা-কর্মচারীর উদ্দেশে দেয়া চিঠিতে লিখেছেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে আজ আমরা সবাই উদ্বিগ্ন-আতঙ্কিত। জীবন ও জীবিকার মাঝে সমন্বয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছি সবাই। এ সংকটকালে সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়েছে। অর্থনীতির অন্যতম নিয়ামক ব্যাংকিং খাতও এর থেকে বাইরে নয়। ইউসিবি এ বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। আমরা আশাবাদী, যথাযথ কর্মকৌশল ও পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ লাভ করব।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য ব্যাংকিং খাতে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা সংকোচন, পেশাগত সুবিধা কমানো এবং চাকরিচ্যুতির মতো পদক্ষেপের কথা শোনা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, এ সংকটকালে বিভিন্ন পেশাজীবীর মতো ব্যাংকাররাও জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন