বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাকে অবহেলা না করে বরং আরও সতর্ক হয়ে দৈনিক কাজকর্ম করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের । সঙ্গে মজুত রাখতে হবে রোগ ঠেকানোর নানা হাতিয়ার। বাইরে বেরলে কী কী রাখবেন সঙ্গে? কী ভাবেই বা সাবধান হবেন?
মাস্ক না পরে রাস্তায় নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, উপযুক্ত উপায়ে মাস্ক ব্যবহারে করোনাকে রুখে দেওয়া যায় প্রায় ৬০ শতাংশ। মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে বা নামিয়ে নয়, মুখে বেঁধেই কথাবার্তা বলতে হবে। নাকের নীচে মাস্ক নয়। নাকও যেন ঢাকা থাকে। কথা বলার সময়ও ড্রপলেট বের হয় এবং তা থেকেও রোগ ছড়ায়। মাস্ক পরলে সেই ভয় দূর হয়।
ঘন ঘন মাস্কের গায়ে হাত দেওয়ার ভুল নয়। এতে মাস্কের গায়ে থাকা জীবাণু যেমন হাতে লাগে, তেমনই হাতের জীবাণু মাস্কে লেগে যায়। মাস্ক নাড়ানোর দরকার পড়লে তার সুতো বা দড়িতে হাত দিন। সরাসরি মাস্কের গায়ে হাত নয়। মাস্ক খোলা ও পরার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন।
চেষ্টা করুন তিন বা চার স্তরের মাস্ক পরতে। সার্জিকাল বা সুতির কাপড়ের মাস্ক পরুন। সার্জিকাল মাস্ক ফেলুন মুখবন্ধ কোনও ডাস্টবিনে অথবা পুড়িয়ে ফেলুন। সুতির মাস্ক পরলে ফিরে এসেই কেচে নিতে হবে। সাবানজলে কেচে জীবাণুনাশক লোশন বা গরম জলে ধুয়ে মেলে দিন। এন নাইনটি ফাইভ মাস্ক স্বাস্থ্যকর্মীরা পরতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে প্রতি দিন এন নাইনটি ফাইভ মাস্ক কাচতে হবে। ভাল করে না শুকোলে পরা যাবে না। সামনে বর্যা কাল। তাই সবাই একাধিক সেট মাস্ক কিনে রাখুন। ভিজে মাস্ক পরলে জীবাণু সংক্রমণ দ্রুত হবে।
এসএমএস। পুরনো এই শব্দের নতুন মানে তৈরি করেছেন চিকিৎসকরা। সোপ অ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স। এই তিন উপায় করোনার সঙ্গে যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র। চেষ্টা করতে হবে এই তিন উপায়কে বন্ধু করে নিতে। অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছে মাস্ক খুলে ফেলেন। নিজস্ব আলাদা কেবিন না থাকলে এই ভুল নয়। বিশেষ করে সেন্ট্রাল এসি বা অফিসের গাড়ির এসি চললে মাস্ক বেঁধে রাখাই নিয়ম। নইলে বাইরের এসি থেকে সংক্রমণ হতে পারে। দূরত্ব রাখুন সকলের সঙ্গেই। এক ঘণ্টা অন্তর হাত স্যানিটাইজ করুন। দু’ঘণ্টা অন্তর সাবান দিন।
হাতে থাকুক গ্লাভস। যাঁদের কাজে ‘হিউম্যান কনট্যাক্ট’ বেশি, তারা অবশ্যই গ্লাভস পরুন। বার বার চুলে হাত দেওয়া বা চোখে-মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা থাকলেও গ্লাভস পরুন। গ্লাভস থাকলে সে প্রবণতায় রাশ টানা যাবে। তবে গ্লাভস খোলার পর ভাল করে হাত ধুয়ে তবে খাবার খান। গ্লাভস সমেত টিফিনবক্স বা জলের বোতলে হাত দেবেন না
হাতে থাকুক গ্লাভস। যাদের কাজে ‘হিউম্যান কনট্যাক্ট’ বেশি, তারা অবশ্যই গ্লাভস পরুন। বার বার চুলে হাত দেওয়া বা চোখে-মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা থাকলেও গ্লাভস পরুন। গ্লাভস থাকলে সে প্রবণতায় রাশ টানা যাবে। তবে গ্লাভস খোলার পর ভাল করে হাত ধুয়ে তবে খাবার খান। গ্লাভস সমেত টিফিনবক্স বা জলের বোতলে হাত দেবেন না।
সব জায়গাতেই দূরত্ব বজায় রাখুন। অফিসে বসার চেয়ারের মাঝে দূরত্ব বাড়িয়ে দিন। মুখোমুখি বসেও যেন তিন ফুট দূরত্ব থাকে নইলে বসার আয়োজন পাল্টে ফেলতে হবে। বাজারদোকানে দূরত্ব রাখুন। প্রয়োজনে হাতে সময় নিয়ে বের হন।
গণপরিবহণে দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। কিন্তু উপায়ও নেই। তাই সেখানেও চেষ্টা করুন দূরত্ব বজায় রাখতে ও ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে সব কাজ করতে। হাতে গ্লাভস থাকলেও ঘন ঘন গ্লাভস খুলে হাত ধুয়ে শুকিয়ে ফের গ্লাভস পরুন।
অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাক। সুখ-দুঃখ ভাগ করুন, কিন্তু টিফিন নয়। একসঙ্গে ধূমপান করতে যাওয়াতেও রাশ টানুন। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। শ্বাসনালীর অ্যাডাপ্টারগুলি ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই রোগ ঢোকার পথ প্রশস্থ হয়। মেয়েরাও কোনও প্রসাধন সহকর্মী বা বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন না এখন।
প্রত্যেকের কাজের জায়গা আলাদা, কাজের ধরনও আলাদা। তাই কর্মক্ষেত্রের সব জিনিস স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে কি না সে দিকেও নজর রাখুন। কিছু জিনিস ব্যক্তিগত ভাবে নিজের কাছেও রাখুন. ঝুঁকি না নিয়ে স্যানিটাইজ করে ব্যবহার করুন। কারও হাঁচি, কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলে তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। মাস্ক না পরা সহকর্মী থেকে দূরে থাকুন। অফিসেও বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরুন।
তবে শুধু সচেতন হলেই চলবে না। নিজের করোনা সংক্রমণ রুখতে নিজেকেও দায়িত্ব নিতে হবে।নিজের শরীরের দিকেও চোখ রাখুন। যদি জ্বর, কাশি ইত্যাদি উপসর্গ আপনার বা আপনার পরিবারের কারও দেখা দেয়, দায়িত্ব নিয়ে হোম কোয়রান্টিনে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।