দ্রুত সংক্রমিত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে বিশ্ব। শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এখনো কোনো ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় বিজ্ঞানীরা নানা সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন- হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
গাইডলাইন মেনে অনেকে মুখে মাস্ক পরার বদলে ফেস শিল্ড ব্যবহার করছেন। মানে হলো মাস্ক দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখার পরিবর্তে প্লাস্টিকের একটি শীট দিয়ে মুখের সামনে দেয়াল তৈরি করা। চলুন দেখে নিই ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক বেশি কার্যকর নাকি ফেস শিল্ড।
ফেস মাস্কের ধারণা
ফেস মাস্ক পরার পেছনের পুরো ধারণাটি অ্যাসিপটোমেটিক ক্যারিয়ার থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করা। এটি কোনো নিকটস্থ স্থানে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে লোকেরা কাশি, হাঁচি, হাসছে বা কথা বলছে। এটি তাৎক্ষণিক ভাইরাল এক্সপোজারকে আটকাতে পারে তবে কার্যকারিতা এটি কীভাবে পরা হয় তার ওপর নির্ভর করে।
অনেক লোক ভুলভাবে মাস্ক পরেন, যা শেষ পর্যন্ত তাদের অকার্যকর করে তোলে। যদি আপনি কথা বলার জন্য মাস্কটি নিচে টানেন, মাস্কের বাইরের অংশ স্পর্শ করেন এবং তারপর মুখ স্পর্শ করেন তাহলে এটি পরার কোনো সুবিধাই আপনি পাবেন না। দ্বিতীয়ত, মাস্কের পুনরায় ব্যবহারের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট নির্দেশনা নেই, যদিও কাপড়ের তৈরি মাস্কগুলো ধুয়ে আবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফেস শিল্ড
মাস্কের বিপরীত ব্যবহার করা ফেস শিল্ড মাথা থেকে পুরোপুরি চিবুকের নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখে। এর ফলে আপনি চাইলেও আপনার মুখ ও নাক স্পর্শ করতে পারেন না। এছাড়া ফেস শিল্ডের পক্ষে আরেকটি যুক্তি হলো, সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে শ্রমিকের কাশির ১৮ ইঞ্চির মধ্যে অবস্থান করলেও এর সংস্পর্শ ৯৬ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া এটি মাস্কের চেয়ে বেশি আরামদায়ক এবং সুবিধাজনক হিসেবে জানিয়েছেন ব্যবহারকারীরা
ফেস শিল্ড ব্যবহারের সঠিক উপায়
পানি ও সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে শিল্ড পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে এবং মাস্কের চেয়ে বেশিবার ব্যবহার করার কারণে খরচ কমতে পারে। এছাড়া শিল্ড পরা অবস্থায় কথা বললে কথা স্পষ্ট হয় এবং ঠোঁটও দেখা যায়। মাস্ক পরা অবস্থায় ঠোঁট দেখা না যাওয়ার কারণে কথা বলার ক্ষেত্রে অনেকের সমস্যায় পড়তে হয়।
যাইহোক, আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (জ্যামা) জার্নালে একটি নিবন্ধ লিখেছেন এমন চিকিৎসকদের মতে, ফেস শিল্ডগুলো চিবুকের চেয়ে কম প্রসারিত হওয়া উচিত, কানের বাইরে পর্যন্ত হওয়া উচিত এবং কপাল ও শিল্ডের মাথার অংশে কোনো ফাঁক থাকা উচিত নয়।
তবে আপনি যখন ভাইরাসে সংক্রমিতদের কাছাকাছি থাকবেন তখন মাস্ক ও শিল্ড দুটোই পরা সবচেয়ে ভালো। যেসব চিকিৎসক ও নার্স করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের জন্য উভয়টি পরা উচিত।
মনে রাখবেন, ফেস মাস্ক বা ফেস শিল্ড করোনাভাইরাস রুখতে দুটোই কার্যকরী। আপনি যেটি সম্ভব সেটি ব্যবহার করুন।