চিকিৎসা খাতে পাঁচ হাজার টেকনোলজিস্ট নিয়োগের ঘোষণা

নতুন পাঁচ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ২ হাজার চিকিৎসক ও ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চিকিৎসা খাতকে আরও শক্তিশালী করতে আরও নতুন অন্তত ৫ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কাজ চলমান রয়েছে। খুব দ্রুতই এই টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ দেয়া হবে।’

রোববার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে করোনা মোকাবিলায় ২ হাজার বেডের অস্থায়ী হাসপাতাল কেন্দ্র উদ্বোধনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বসুন্ধরা করোনা ডেডিকেটেড অস্থায়ী হাসপাতালটিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোভিড হাসপাতাল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র ২০ দিনের মধ্যে এই হাসপাতালটি (বসুন্ধরা অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল) সরকার প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল। এখানে অত্যাধুনিক মোট ২০১৩টি আইসোলেটেড শয্যা রয়েছে যার মধ্যে ৭১টির সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার যুক্ত করা রয়েছে। এছাড়া এখানে আরওঅন্তত ৪০০টি পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। আইসিইউ ব্যবস্থাসহ এই হাসপাতালটি উন্নত দেশের কোভিড অস্থায়ী হাসপাতালের থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই।’

একই সাথে, করোনা মোকাবিলায় দেশে এখন প্লাজমা থেরাপির কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আমেরিকার উৎপাদিত ওষুধ রেমডেসিভির এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে এবং সরকারের নিকট এই ওষুধ মজুদ করা হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এছাড়া নন কোভিড হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের বাধ্যতামূলক চিকিৎসার জন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান জাহিদ মালেক। এক্ষেত্রে মানুষ যেন করোনার লক্ষ্মণ থাকলে তার তথ্য গোপন না করেন সে ব্যাপারেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সকলের নিকট অনুরোধ করেন।

লকডাউন শিথিল করা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকার প্রথম থেকেই একটি সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনায় কাজ করেছে। যখন লকডাউন জরুরি ছিল তখনই লকডাউন করা হয়েছে, যখন শিথিল করা প্রয়োজন তখন স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সাপেক্ষে শিথিল করা হয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে সরকার যা কিছু করছে তা ভেবেচিন্তেই করছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারলে করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি দেশ অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রেহাই পাবে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে হাসপাতালটি করতে পেরেছি এটা বড় আনন্দের। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে, উনি আমাদের হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। আমরা যতটুকু সম্ভব ততটুকু করেছি, এখন হাসপাতালটি যাতে ঠিকভাবে পরিচালিত হয়, রোগীরা যাতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাই।’

এসময় তিনি করোনা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জন্য দুশোটি শয্যা বরাদ্দ রাখার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) সিরাজুল ইসলাম, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বসুন্ধরা গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা আবু তৈয়ব, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সাজ্জাদ হায়দার ও আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সম্পাদক জুয়েল মাজহার, আইসিসিবি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. এহসানুল হক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরোয়ার প্রমুখ।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন