বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুরে সরকারি ১০ টাকা কেজির চাল অবৈধ মজুদের অপরাধে এক ডিলারের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এ দণ্ড প্রদান করেন। এসময় উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডিত ব্যক্তির নাম ইউনুস সরদার। তিনি উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা গেছে, ইউনুস সরদারের বাড়িতে বিপুল পরিমান ১০ টাকা মূল্যের চাল মজুদ রয়েছে -এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ইউনুস সরদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। পরে সেখান থেকে বস্তাভর্তি ৫৩০ কেজি ১০ টাকা মূল্যের চাল পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ইউনুস সরদার স্বীকার করেছেন তিনি ত্রাণ দেয়ার জন্য ১০ টাকা মূল্যের ওই চাল ক্রয় করেছেন। কিন্তু দেখা গেছে তিনি ত্রাণ দেয়ার কথা বললেও নিজেই সরকারের কাছ থেকে ত্রাণ গ্রহন করছেন। ইউনস সরদারকে ব্যপকভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি চাল মজুদের বিষয়ে অন্য কারোর নাম বলেননি। তবে চাল কেনার বিষয়ে কয়েকজনের নাম তিনি বলেছেন। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে সরকারি চাল আত্মসাতের অপরাধে ইউনুস সরদারকে তিন মাসের বিনাশ্রম করাদন্ড, নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশের মাধ্যমে জেলে হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব খান্দকার ওই এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার। আর সরকারি চাল মজুদ রাখার অপরাধে দণ্ডিত ইউনুস সরদার হলেন ডিলার বিপ্লব খন্দকারের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, যুবলীগ নেতা ও ডিলার বিপ্লব খন্দকার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা মূল্যের ওই সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্যোগে তার ম্যানেজারের ঘরে মজুদ রেখেছেন। সুযোগ বুঝে এগুলো সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই উপজেলা প্রশাসন খবর পেয়ে চালগুলো জব্দ করেছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে চালের ডিলার যুবলীগ নেতা বিপ্লব খন্দকারকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। যদিও দণ্ডিত ব্যক্তি চাল আত্মসাতের পুরো অপরাধ নিজেই মাথা পেতে নিয়েছেন বলে ওই ডিলারকে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলে দাবি উপজেলা প্রশাসনের। তবে এই ঘটনায় উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাদী হয়ে নিয়মিত মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।