বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মারা যাওয়া ব্যক্তিসহ সেখানে চিকিৎসাধীন অন্য পাঁচজনের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এমনকি ওই ইউনিটে চিকিৎসা শেষে যারা বাড়িতে ফিরেছেন তারাও করোনায় আক্রান্ত নন।
শনিবার (৪ এপ্রিল) ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে আসা ছয়জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পারিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন।
জানা গেছে, শের-ই-বাংলা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রথম রোগী ভর্তি হয় ১৭ মার্চ বিকেলে। ওই দিন চট্টগ্রামের এক কাভার্ডভ্যানের চালক জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলাব্যাথা নিয়ে ভর্তি হন। প্রচলিত চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ১৯ মার্চ ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি।
১৯ মার্চ একই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের এক যুবক। তিনি ঢাকায় রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। তিনিও সুস্থ হয়ে ২১ মার্চ বাড়ি ফিরে যান।
এরপর একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ২৩ মার্চ বরিশালের বানারীপাড়ার এক কলেজছাত্র ও নগরীর বাজার রোডের এক যুবক, ২৪ মার্চ পটুয়াখালীর বাউফলের এক তরুণ, ২৫ মার্চ বরিশাল সদরের চাঁদকাঠী এলাকার এক তরুণী এবং একই জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার এক নারী ভর্তি হন।
২৮ মার্চ বিকেলে ভর্তির পর ২৯ মার্চ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় পটুয়াখালী সদরের এক ব্যক্তি।
সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকেলে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন মেহেন্দিগঞ্জের আরেক যুবক।
তাদের মধ্যে প্রচলিত চিকিসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া প্রথম দুজনের নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়নি।
হাসপাতালে মারা যাওয়া একজন এবং চিকিৎসাধীন পাঁচজনসহ মোট ছয়জনের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিল আইইডিসিআরে। শনিবার আইইডিসিআর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেছেন, এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর যে, তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত নন। এ খবর জনগণের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করবে।
করোনার সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডা. মো. বাকির হোসেন।
এদিকে, জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর সুস্থ হয়েও বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না তিন ব্যক্তি। ওই ওয়ার্ডেই অনেকটা কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তারা। আইইডিসিআরের প্রতিবেদন আসার পর তারা বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. নাজমুল হুদা।
অপরদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতে বরিশালের গৌরনদীর এক ব্যক্তি জ্বর, ডায়রিয়া ও গলাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. সাইয়্যেদ আমরুল্লাহ।