সংসদ অধিবেশন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করার প্রস্তাব

করোনাভাইরাসের কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ অধিবেশন করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে সংসদ সচিবালয়। বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের এক অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায় এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটতে চলেছে। করোনাভাইরাসের কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ডাকা সংসদের বিশেষ অধিবেশনও স্থগিত করা হয়।

২২ মার্চ জাতীয় সংসদে এ বিশেষ অধিবেশন বসার কথা ছিল। দু’দিনের এ অধিবেশনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এবং নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ভাষণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ এড়াতে সে অধিবেশন স্থগিত করা হয়।

এর আগে জাতীয় সংসদের সর্বশেষ (ষষ্ঠ) অধিবেশন শেষ হয়েছিল ১৮ ফেব্র“য়ারি। সে হিসাবে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে সংসদের অধিবেশন শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এ অধিবেশন ডাকা সম্ভব নাও হতে পারে। আর তাই বিকল্প হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংসদের বৈঠক করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানা গেছে।

সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তার মতে, ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর অধিবেশন আহ্বানের সুযোগ আছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তা সম্ভব নাও হতে পারে। ভিডিও কনফারেন্স করতে গেলেও কমবেশি জনসমাগম হবে। তখন সংবিধানের ‘অ্যাক্ট অব গড’ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে।

সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদে অনুযায়ী, ‘সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি ও পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্যে ৬০ দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকবে না। তবে রাষ্ট্রপতি এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। কার্যপ্রণালি বিধি দ্বারা বা অন্যভাবে সংসদ যেভাবে নির্ধারণ করবে, সংসদের বৈঠক সে সময়ে ও স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।’

অবশ্য, সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় দৈব-দুর্বিপাকের কারণে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে অধিবেশন আহ্বান না করলেও চলে। দৈব-দুর্বিপাকে অধিবেশন পেছানোর সুযোগ আছে সংবিধানে।

এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘সংবিধানে অ্যাক্ট অব গড’-এ শুধু সংসদ অধিবেশনই নয়, জাতীয় নির্বাচনও পিছিয়ে দেয়া যায়। সরকারের ৫ বছরের মেয়াদ ৭ বছরও করা যায়। সংসদের অধিবেশন পেছাতে হলে প্রধানমন্ত্রীর লিখিত প্রস্তাব লাগবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন