একটি জাপানি প্রতিষ্ঠান ও কিয়োটো ইউনিভার্সিটি মিলে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা ২০২৩ সালে আনতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট। সুমিটোমা ফরেস্ট্রি নামের প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, তারা গাছের বৃদ্ধি ও মহাকাশে গাছের উপকরণ ব্যবহার নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। তারা চরম পরিবেশেও বিভিন্ন ধরনের গাছ নিয়ে পরীক্ষা চালাবে।
বায়ুমণ্ডলে উৎক্ষেপণ করা বিভিন্ন স্যাটেলাইটের জঞ্জাল ক্রমবর্ধমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে দিক থেকে কাঠের স্যাটেলাইটগুলো কোনো ধরনের ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়া তৈরি না করেই ধ্বংস হয়ে যাবে। কিয়োটো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও জাপানি নভোচারী তাকাও দই বলেন, “আমরা এ বিষয়ে খুব উদ্বিগ্ন যে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করা সব স্যাটেলাইট জ্বলতে থাকে এবং ক্ষুদ্র অ্যালুমিনা কণা তৈরি করে। যা অনেক বছর ধরে ওপরের বায়ুমণ্ডলে ভাসতে থাকে।”
যা পৃথিবীর জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব তৈরি করে। এর নিরসনে তারা কাজ করছেন। তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হলে স্যাটেলাইটের ইঞ্জিনিয়ারিং মডেল তৈরি করা, এর পর তারা ফ্লাইট মডেলের দিকে যাবেন। তাকাও ২০০৮ সালের মার্চে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন ভ্রমণ করেন। সেখানে তিনি প্রথমবারের মতো মহাশূন্যে বুমেরাং নিক্ষেপ করেন, যা ছিল মাইক্রোগ্রাভিটি পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে নকশাকৃত।
এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত সুমিটোমো ফরেস্ট্রি ৪০০ বছরের পুরোনো সুমিটোমো গ্রুপের একটি অংশ। তারা বর্তমানে তাপমাত্রার পরিবর্তন ও সূর্যের আলো প্রতিরোধী কাঠের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)-এর দেওয়া তথ্য মতে, বর্তমানে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে ছয় হাজারের মতো স্যাটেলাইট। এর মধ্যে ৬০ ভাগই অকেজো বা মহাকাশের জঞ্জাল।
গবেষণা সংস্থা ইউরোকনসাল্ট জানায়, চলতি দশকের প্রতি বছরে ৯৯০টির মতো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। সে হিসেবে ২০২৮ সালের মধ্যে কক্ষপথে থাকবে ১৫ হাজার স্যাটেলাইট। ইতিমধ্যে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সই ৯০০টিরও বেশি স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট চালু করেছে এবং আরও হাজার হাজার রয়েছে পরিকল্পনায়।
মহাকাশের এই সব জঞ্জাল প্রতি ঘণ্টায় ২২ হাজার ৩০০ মাইলে গতিতে পথ চলে, এর আঘাত যেকোনো বস্তুর জন্য ক্ষতিকর। ২০০৬ সালের ছোট একটি জঞ্জাল ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে আঘাত করে এর শক্তিশালী জানালা থেকে একটি চিপ খুলে ফেলে।