ভারতের স্থানীয়ভাবে তৈরি কোভ্যাক্সিন নামের একটি করোনাভাইরাসের টিকা সরকার তাড়াহুড়ো করে অনুমোদন করেছে এবং তা ‘বিপজ্জনক’ হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। কোভ্যাক্সিন ছাড়াও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনেরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত।
কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন, কোভ্যাক্সিন নামে ওই টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সংক্রান্ত উপাত্ত তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের মাধ্যমে পুরোপুরি পর্যালোচনা করে দেখা হয়নি। তার মতে, এটা এক ‘বাধ্যতামূলক প্রয়োজন’; কিন্তু তা করা হয়নি।
আলজাজিরার বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়, সাবেক মন্ত্রী শশী থারুরও বলেছেন- আগেভাগেই এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং এটা বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেছেন। সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, ভারত-বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা দুটিই নিরাপদ এবং তা অবিলম্বে ব্যবহার করা যাবে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার জানাচ্ছে, ভারত-বায়োটেক বা ভারতীয় ওষুধ কর্তৃপক্ষ টিকাটি নিরাপদ বলে জানালেও করোনাভাইরাস ঠেকাতে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেনি।
তবে রয়টার্স বলছে, একটি সূত্র তাদের জানিয়েছে যে টিকাটির দুটি ডোজ দেওয়ার পর এর কার্যকারিতা ৬০ শতাংশের বেশি হতে পারে। কোভ্যাক্সিন নামের টিকাটি ভারতেই আবিষ্কৃত হয়েছে। দেশটির চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা আইসিএমআরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারত বায়োটেক এই ভ্যাক্সিনটি তৈরি করেছে।
কলকাতা থেকে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী জানান, কোভ্যাক্সিন টিকাটির কার্যকারিতার পরীক্ষার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল এখনো চলছে। মোট ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপরে তৃতীয় পর্যায়ের এই ‘এফিকেসি ট্রায়াল’ চলার কথা। কিন্তু গত সপ্তাহ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক নথিভুক্ত হয়েছেন ১৩ হাজারের মতো।
এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি নিরাপদ কীনা তার পরীক্ষা ভারতে ১৬০০ লোকের মধ্যে চালানোর কথা ছিল। কিন্তু ঠিক কতজনের ওপরে পরীক্ষাটি করা হয়েছে এবং তা থেকে কী বেরিয়ে এসেছে, সেই গোপন তথ্য শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছেই জমা দিয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট।