করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা টের পেয়েও ঝুঁকি কমিয়ে দেখিয়েছেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি তিনি বিষয়টি গোপনও করতে বলেছিলেন। ফাঁস হওয়া এক অডিও ফাইল থেকে এ তথ্য জানা গেছে বলে দাবি করেছে সিএনএন।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক বব উডওয়ার্ডকে ফেব্রুয়ারি মাসেই তিনি বলেন, এই ভাইরাসটি মারাত্মক, তবে জনগণের মধ্যে যাতে আতঙ্ক তৈরি না হয় সেজন্য ইচ্ছে করেই ঝুঁকি কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করতে চান তিনি।নিজের প্রকাশিতব্য বই ‘রেইজে’ উডওয়ার্ড জানিয়েছেন, জানুয়ারির ২৮ তারিখেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুব গোপনে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে তথ্য দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন।
তিনি জানান, ভাইরাসটি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনকি কোন রোগলক্ষণ ছাড়াই যে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে, এই তথ্যও ট্রাম্পকে জানানো হয়েছিল। উডওয়ার্ড লিখেছেন, এসব তথ্য জেনে ট্রাম্প নাকি রীতিমত চমকে গিয়েছিলেন। মে মাসে উডওয়ার্ডকে ট্রাম্প জানান, ও’ব্রায়েন এর এই ব্রিফিং এর কথা তার মনে নেই। তবে তিনি এসব কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে, ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে, উডওয়ার্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, এবং এটি সবচেয়ে কঠিন ফ্লুয়ের চাইতেও বেশি ভয়াবহ। যদিও মার্চে ট্রাম্প টুইটে লেখেন করোনাভাইরাস ফ্লুয়ের চাইতে মারাত্মক নয়, এবং বারবারই তিনি বলে এসেছেন দ্রুতই এই ভাইরাস হারিয়ে যাবে।
এছাড়া মার্চে উডওয়ার্ডকে ট্রাম্প বলেন, এই ভাইরাসটি শুধু বয়স্কদেরই আক্রান্ত করে এমন না, অথচ আগস্ট মাসেও তিনি দাবি করেন তরুণরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় না। উডওয়ার্ডকে মার্চ মাসেই ট্রাম্প পরিষ্কার বলেছেন, আমি সবসময়েই ভাইরাসটির ঝুঁকি কমিয়ে দেখাতে চেয়েছি, এখনও সেটাই চাই কারণ আমি চাই না এ নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হোক।
ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৩ লাখ, আর এ পর্যন্ত মারা গেছেন এক লাখ আটাশি হাজার ৬৮৮ জন।