পুরস্কার অর্জন, ভিন্নমাত্রায় ‘আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস’

দেশে-বিদেশে প্রশংসিত ই-মিউটেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে প্রথমবারের মতো ‘স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ’ ক্যাটাগরিতে জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ‘জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ সম্প্রতি অর্জন করে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই গৌরবের মধ্য দিয়ে আজ ২৩ জুন দেশে ভিন্নমাত্রায় পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস’।

এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, ‘জাতিসংঘের পুরস্কার অর্জন ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর ও সংস্থাগুলোয় কর্মরত সবার মনোবল ও কর্মস্পৃহা বাড়িয়েছে বহুগুণে। আরও ভালোভাবে ভূমিসেবা প্রদানে সবাই এখন দৃঢ় সংকল্পিত।’

‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পুরস্কারকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির সম্মিলিত অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের পুরস্কার প্রাপ্তির পর আমাদের ওপর দায়িত্ব আরও বেড়েছে। এ স্বীকৃতি ধরে রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গত ১০ জুন ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন তিনি।

‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ হচ্ছে পাবলিক সার্ভিস তথা জনসেবায় স্বীকৃতি প্রদানের সর্বোচ্চ বৈশ্বিক সম্মাননা।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রগামী ভূমিকা পালনের মাধ্যমে যেসব প্রতিষ্ঠান কার্যকর এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম জনপ্রশাসন গঠনে অবদান রাখে সেসব প্রতিষ্ঠানকে এ সম্মাননা দেয়া হয়।

গত ৫ জুন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে এক চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই অর্জনের বিষয়টি জানান জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যু ঝেনমিন। এরপর ১৬ জুন জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ৭টি দেশের ৭টি প্রতিষ্ঠান কিংবা উদ্যোগের নাম ঘোষণা করে।

বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘ই-মিউটেশন’ উদ্যোগ ছাড়াও বতসোয়ানা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং স্পেনের বিজয়ী সরকারি পরিষেবামুখী উদ্যোগগুলো মধ্যে আছে ই-শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম, নিম্ন আয়ের যুবকদের শিক্ষা, পরিকল্পনা পরিষদ, সহায়তা অধিকার, প্রবীণ স্বাস্থ্যসেবা, বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কিত উদ্যোগ।

এ বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস ফোরাম’ ও ‘পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, যা জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করে ।

তাই এবার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে জাতিসংঘ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ অন্যান্য মাধ্যমে বিভিন্নমুখী প্রচার কার্যক্রম দ্বারা এই অসামান্য অর্জন ও পুরস্কার বিজয়ের বিষয়টি তুলে ধরার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ভূমি মন্ত্রণালয় সব ভূমিসেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তরের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

এই জটিল কর্মযজ্ঞ দেশের তৃণমূল পর্যায়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে উপজেলা/ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ‘ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল’ সম্প্রসারণ ও উচ্চ গতির ইন্টারনেট সহজলভ্য করার কারণে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবং ভূমিসচিব মো. মাক্‌ছুদুর রহমান পাটওয়ারীর তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে তিন পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারা দেশে ইমিউটেশন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এ কাজে কারিগরি সহায়তা করছে আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্প। ভূমি সংস্কার বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় সহকারি কমিশনারদের (ভূমি) মাধ্যমে ই-নামজারি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন