নিম্নচাপে পরিণত আমফান, নামলো মহাবিপদ সংকেত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান ক্রমশ দুর্বল হয়ে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এ কারণে দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে আগের মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিন (৩৮) এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, ঝিনাইদহ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে গভীর স্থনিম্নচাপ আকারে সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে যেতে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদে উপকূলে বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকতে পারে। সাগর সাধারণত উত্তারল থাকবে।

মােংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে আগের ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের ৯ (নয়) নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বায়ুচাপের তারতম্য এবং বাতাসের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরােজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভােলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নােয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিমাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলােচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরােজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভােলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরের ওপর দিয়ে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এর আগে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল দিয়ে বুধবার বিকেলে ভূভাগে প্রবেশ করার পর কলকাতাসহ ওড়িস্যা ও চব্বিশ পরগনায় ব্যাপক ধ্বংসযঞ্জ চালায়। এরপর সুন্দরবনের দক্ষিণপূর্ব উপকূল দিয়ে এটি বাংলাদেশের ভূভাগে প্রবেশ করে। মুষলধারে বৃষ্টি আর সুন্দরবনের বাঁধায় ঘূর্ণিঝড় কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও এর তাণ্ডবে উড়ে গেছে অনেক ঘর, উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা। তবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সব তথ্য এখনো আসেনি।

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব সাতক্ষীরা থেকে পটুয়াখালী উপকূল পর্যন্ত ছিল সবচেয়ে বেশি। বুধবার রাত নয়টায় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি ঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার গতিবেগে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত করে। এ সময় ১২ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ছিল। এর আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপে প্রথম আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি। সুন্দরবন বাধা অতিক্রম করার কারণে আমফানের তাণ্ডব কিছুটা কম হয়েছে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন