বড় ইনিংস খেলার টোটকাটা তামিম জেনে নিলেন রোহিতের কাছে

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে খেলা হলে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ থাকেন রোহিত শর্মা। বিশ্বের অন্যান্য দেশ হয়তো আগে পরিকল্পনা সাজায় বিরাট কোহলির ব্যাপারে। কিন্তু বাংলাদেশকে ভাবতে হয় রোহিতের ব্যাপারে।

তা হবেই না কেন? সেই ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু। মেলবোর্নে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে খেললেন ১৩৭ রানের ইনিংস, দুই বছর পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে করলেন অপরাজিত ১২৩ রান এবং সবশেষ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ফের সেঞ্চুরি; এবার তার ব্যাটের সংগ্রহ ১০৪ রান।

বলা বাহুল্য, তিনটি ইনিংসই টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত করেছে। এ তো গেল, বহুজাতিক টুর্নামেন্টের কথা। সম্প্রতি দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও প্রায়ই দুই দলের মধ্যকার পার্থক্য হয়ে দাঁড়ান এ ডানহাতি ওপেনিং ব্যাটসম্যান।

যা কি না রীতিমতো বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের জন্যও চিন্তার কারণ। রোহিতকে কাছে পেয়ে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন জাতীয় দলের বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। শুক্রবার রাতে রোহিতের সঙ্গে করা ফেসবুক লাইভে এ প্রসঙ্গ তুলে আনেন তামিম।

খানিক অনুযোগের স্বরেই তামিম বলেন, ‘রোহিত ভাই, আমাদের সঙ্গে যা করেন তা ঠিক না!’ এটুকু শুনে খানিক ভড়কে যান রোহিত, ‘মানে?’ পরিস্থিতি সহজ করেন তামিম, ‘দাঁড়ান, দাঁড়ান আমি বলছি।’

এরপর রোহিতের খেলা বিষ্ফোরক সব ইনিংসের ফিরিস্তি নিয়ে বসেন তামিম। বলেন, ‘২০১৫ সালের বিশ্বকাপে আমাদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরি করেছেন, এমনকি ২০১৯ বিশ্বকাপেও সেঞ্চুরি করেছেন।’

তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৯ সাকের বিশ্বকাপে নিজেই ক্যাচ ছাড়ার ঘটনা। তামিম বলেন, ‘এখানে (২০১৯ বিশ্বকাপের সেঞ্চুরি) আমাকে কৃতিত্ব দিতে হবে। কারণ, আমি আপনার ক্যাচ ফেলেছিলাম। আপনার কোন ধারণাই নেই এরপর আমাকে কী পরিমাণ ট্রল করা হয়েছে! এখনও সেই ক্যাচটা নিয়ে কথা শুনতে হয়। মাঝে মাঝে মানুষ বোঝে না এমন ঘটনা মাঠে ঘটতেই পারে!’

তামিমের অনুযোগ শুনে পরিবেশ-পরিস্থিতি হালকা করতে সান্ত্বনার সুরেই রোহিত বলেন, ‘সবাই জেতার জন্যই খেলে। দল, খেলোয়াড় সবাই একশ ভাগ দিতে মাঠে নামে। কেউ মাঠে ক্যাচ ফেলতে যায় না। খারাপ খেলতে চায় না। সবাই দল জেতাতেই চায়।’

সুযোগ বুঝে তামিম জেনে নেন রোহিতের কাছ থেকে বড় ইনিংস খেলার টোটকা। বিশেষ করে সেঞ্চুরি করার পর যেন বের হয় রোহিতের অন্য এক রূপ। ক্রিকেট বলকে ফুটবলের মতো দেখতে শুরু করেন আর খেলেন বড় বড় সব শট। এসব দেখে তাজ্জব বনে যান। তাই জিজ্ঞেস করেন এর পেছনের রহস্য।

উত্তরে রোহিত বলেন, ‘এটা সত্যিই যে, ইনিংসের শুরুতে আমি চাপে থাকি। তবে সেঞ্চুরি করে ফেলার পর আর কোন চাপ মনে হয় না। নির্ভার হয়ে খেলার চেষ্টা করি। আমার কাজ থাকে ৪০-৪৫ ওভার পর্যন্ত থাকা, ৪২ ওভারের পর চেষ্টা করি প্রতিটা বল মারতে। এটা অনেক সময় নির্ভর করে আমার সঙ্গে উইকেটে কে আছে, তার ওপর। যদি দেখি মিডল অর্ডারের সেট কোনো ব্যাটসম্যান আছে বা পরে আরও ব্যাটসম্যান আছে, তখন সুযোগ নিই।’

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন