চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহে আরো ‘সতর্ক’ হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সম্প্রতি একটি করোনারোগীদের চিকিৎসায় ডেডিকেটেড হাসপাতালে ‘এন-৯৫’ লেখা মাস্কের বক্সে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করা হয়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। প্রসঙ্গটি টেনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) কর্মকর্তাদের আরো সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার করোনাভাইরাস সমন্বয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ ও ঢাকার কয়েকটি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে উপস্থিত কর্মকর্তাদের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এসময় কথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ।

স্বাস্থ্য সচিব জানান, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় করোনা টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের যতায়াতের জন্য মাইক্রোবাস নির্দিষ্ট করা আছে। এটা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেই বিষয়ে আমরা নজর দিবো। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আরও সমন্বয় করা হবে।

আর সিএমএসডি’র পরিচালক প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদের কাছে সংরক্ষিত পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্টের (পিপিই) মধ্যে ৭০ শতাংশ দেশে উৎপাদিত আর বাকী ৩০ শতাংশ চীন থেকে আমদানিকৃত। এন-৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। এর সমপর্যায়ের কেএন ৯৫ এগুলো আছে। যা সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে ২ লাখ কেএন-৯৫ এফএফপিটু এসেছে। এগুলো বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল, পিসিআর ল্যাবের সুরক্ষার জন্য প্রেরণ করেছি। এটা পর্যাপ্ত এই সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট স্থানে। আর আমাদের কাছে ককিটও পর্যাপ্ত রয়েছে।’

সিএমএসডি’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমাদের মন্ত্রীর কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছি। যারা সাপ্লাই দেয়, তারা কি সঠিকভাবে সবকিছু দিচ্ছে কিনা? মহানগর হাসপাতালে কিছু জিনিস গিয়েছে। নাম দিচ্ছে ভালো কিন্তু সঠিকভাবে ঠিক জিনিসগুলো যায়নি। এটা আপনাদের দেখা উচিত। আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন, বলে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সাপ্লাইয়ার তারা ঠিকভাবে দিচ্ছে কিনা কিংবা সঠিক জিনিসটা কিনছে কিনা এটা দেখা দরকার এটা দেখবেন। এটা নিয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। আমি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ছবিটা, এটা যাচাই করে দেখার জন্য।’

পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের কেন্দ্রীয় ওষুধাগারসহ একটা কমিটি করা আছে। যারা এই সরবরাহটা আসবে তার কারিগরি দিকগুলো ঠিক আছে কিনা তার পরীক্ষা করার জন্য। ইতিমধ্যে আমরা প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পিপিই নিম্নমানের হওয়ার নষ্ট করেছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। হয়তো জরুরী প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে আমাদের ভুল হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এখন আমারা চাচ্ছি আমাদের এই ভুলগুলো যাতে না হয়। সঠিকভাবে বিতরণটা করতে পারি সেই উদ্যোগটা আমরা নিয়েছি।’

পরে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘এন৯৫ লেখা বক্স কিন্তু ভিতরে যে জিনিটা সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার। এটা একটু নজর দেন। যেহেতু এখন লাইভে আছেন, আমরা কথা বলছি। লেখা আছে এন৯৫ কিন্তু সবসময় জিনিসটা সঠিক যাচ্ছে না। এর সাপ্লাইয়ার কে? মহানগর হাসপাতালে (বাবুবাজার) এটা গেছে, এটাতো কভিডের জন্য ডেডিকেটেড। যদি এটা কিছু কিছু জায়গায় হয় তাহলেতো তা ঠিক না। আপনারা যাদের এই ব্যবসাটা দেন, যারা নেয় বা সাপ্লাই দেয়। বক্সতো ঠিক আছে কিন্তু বক্সের ভিতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা সেটার জন্য নজরদারিটা বাড়ানোর প্রয়োজন। বা যিনি এটা গ্রহণ করবেন তিনি যেন দেখে শুনে তা গ্রহণ করেন। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই।’

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন