প্রবাসীদের ফেরাতে নানা দেশের চাপ, সময় চায় ঢাকা

নতুন এই সংকটের মধ্যে বাড়তি চাপে পড়লো বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে ফেরাতে চাপ দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ।

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার বাংলাদেশিকে জরুরি ভিত্তিতে ফিরিয়ে নিতে ঢাকার ওপর চাপ বাড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ৩৫০ জন বাংলাদেশির একটি তালিকা দিয়ে ঢাকাকে জানিয়ে দিয়েছে, ডিটেনশন সেন্টার থেকে ছাড়া পাওয়া ১২৫ জনকে আগামী সপ্তাহেই বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে তারা।

তাদের ওই ফ্লাইট ঢাকায় নামার জন্য কুয়েত অনুমতিও চেয়েছে। তবে করোনার কারণে ১৪ এপ্রিলের আগে ফ্লাইট না পাঠাতে অনুরোধ করেছে ঢাকা।

তিন উপসাগরীয় দেশ বাহরাইন, কাতার ও কুয়েত জানিয়েছে, তারা সেসব দেশে থাকা প্রায় ৩৮ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে চায়। সৌদি আরবি এবং ওমানে থাকা হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরানোর চাপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর, কোরিয়া ও মালদ্বীপও অভিবাসীদের ফেরত নিতে চাপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের ওপর।

আন্তঃমন্ত্রণালয়ে গত রবিবার ওই বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে ছিলেন  পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

বৈঠকে কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিতে আনতে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা। মালদ্বীপে প্রায় ৩৫ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ। করোনার কারণে তারা এখন কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন।

সিঙ্গাপুরে কয়েকশ বাংলাদেশি অবৈধ। সূত্র বলছে, কঠোর নিয়মের দেশ সিঙ্গাপুর থেকেও অবৈধদের ফেরাতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে হয়তো সময় নেওয়া যাবে। বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী কাটিয়ে ওঠা পর্যন্ত সময় নিতে চায় বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। অনেকের কাজ নেই। অনেকের কাজ থাকবে না। অনেককে পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে।

বহু দেশ প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত নিতে বারবার তাগাদা দিচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। যারা সেসব দেশের কারাগারে আছে, তাদের এখনই নিজ খরচে ফেরত পাঠাতে চায় দেশগুলো।

সবচেয়ে সমস্যায় পড়বেন অবৈধভাবে যারা আছেন। আমরা মিশনগুলোয় নির্দেশ দিয়েছি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য।

সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য সরকার, বায়রা, বিদেশি স্টেকহোল্ডাররা একসঙ্গে কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি সুপারিশ করেছে, কোনো শ্রমিক দেশে ফিরে এলে তাকে নগদ ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

এ ছাড়াও তাকে সুরক্ষা দিতে যা যা প্রয়োজন তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ মিশনগুলোকে প্রবাসী বাংলাদেশি যারা খাদ্য, চিকিৎসা ও থাকার সমস্যায় আছেন, তাদের সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আমরা বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করেছি বৈধ যারা কভিড ১৯-এর কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের যেন চাকরিতে বহাল করা হয়।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন