করোনা পরীক্ষায় দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা চেয়েছে শতাধিক দেশ

করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় সহযোগিতার জন্য ১২১টি দেশের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বুধবার এ কথা জানিয়েছেন।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে।কূটনৈতিক কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু আমরা শুরুর দিকে ছড়িয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তাই বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে এত বেশি অনুরোধ পাচ্ছি।

’ তিনি আরো জানান, করোনা পরীক্ষার কিট সরবরাহ অথবা মানবিক সহায়তা—এ দুইটির কোনটি দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করতে দক্ষিণ কোরিয়া একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে।কোন কোন দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ঐ সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করেছে, তা অবশ্য বলেননি ঐ কর্মকর্তা। তবে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট নির্মাতা দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো এবং ইতালিসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

২০ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম নোভেল করোনা ভাইরাসের সন্দেহভাজন রোগী দেখা যায়। দেশটিতে মোট ৯ হাজার ৫৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে; কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ বা তার নিচে রয়েছে। চীনের পর এক সময় করোনা ভাইরাস দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল; কিন্তু ব্যাপক পরীক্ষাসহ গৃহীত অন্যান্য কর্মকাণ্ডে দেশটিতে ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসে।

বেশি বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নেওয়া কার্যকর পদক্ষেপ খুবই প্রশংসিত হয়।চীন ভাইরাসটিকে শনাক্ত করার তিন দিন আগে ৪ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরীয় বিশেষজ্ঞরা করোনা পরীক্ষার পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেলে। ৯ জানুয়ারি তারা সন্দেহজনক ঘটনাগুলো পরীক্ষা করা শুরু করে। আগ্রাসী ও টেকসই পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়া করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের গতি শ্লথ করে। বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় তাদের গড় পরীক্ষার হার সবচেয়ে বেশি।

গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের শারীরিক পরীক্ষা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। দেশটির শতাধিকহাসপাতাল-ক্লিনিকের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস টেস্টে প্রায় অর্ধশত ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরিও কাজ করছে। উপসর্গ না থাকলেও অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন—এমন লোকদের পরীক্ষা করা, নিশ্চিত রোগীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার মতো বিস্তৃত কর্মসূচি নিয়েছিল দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন