দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইউরিয়া সার মজুদ আছে: শিল্প মন্ত্রণালয়

দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইউরিয়া সার মজুদ আছে। সেই সঙ্গে বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন সব সার কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট সার পৌঁছে দিতে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, কর্পোরেশনের সার কারখানা ও গোডাউনসমূহে মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। গত বছর একই সময়ে ইউরিয়া সারের মোট মজুদের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৫ টন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইউরিয়ার মোট চাহিদা ২৫ লাখ ৫০ হাজার টন এবং এর প্রায় ২২ লাখ ৫০ হাজার টন সার ইতিমধ্যে কৃষকদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে।

অন্যদিকে কাফকোসহ বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন কারখানাগুলোতে বিসিআইসির কারখানাসমূহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং, মাস্ক এবং প্রয়োজনীয় পিপিই প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে বিসিআইসির অধীন ৬টি সার কারখানার মধ্যে ৩টি কারখানা চলমান রয়েছে এবং অন্য ৩টি কারখানা নিয়মিত সংক্ষিপ্ত মেরামতি শেষে শিগগিরই উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে বলে বিসিআইসির সূত্রে জানা গেছে।

সার উৎপাদন ছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী বিসিআইসির সার আমদানি ও সরবরাহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বিসিআইসর চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান ও কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাসহ সার ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। এদিকে ইউরিয়া সার পরিবহন, ডিলারের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ইউরিয়া সার যথাসময় উত্তোলন করে সারাদেশে কৃষকদের নিকট পোঁছানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য গত ১১ এপ্রিল পত্রের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

বিসিআইসির সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এ বছরের এপ্রিল মাসের ইউরিয়া সারের বরাদ্দ জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে প্রেরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মে ও জুন ২০২০ মাসের বরাদ্দও প্রেরণ করা হবে। তবে যেসব ডিলার এখন পর্যন্ত এ বছরের মার্চ মাসের বরাদ্দ মোতাবেক নির্ধারিত পরিমাণ ইউরিয়া সার উত্তোলন করেননি, তাদের দ্রুত সার উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৯ এপ্রিল পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীদের জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত করে এ আদেশ জারি করেছে।

মহামারী পরিস্থিতি বা এর পরবর্তী সময়ে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষক পর্যায়ে সার, বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা নির্দেশ প্রদান করেছেন।

উল্লেখ্য, কৃষি উৎপাদনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ইউরিয়া সার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বিসিআইসি সারাদেশে ২৯টি (২৪টি বাফার গোডাউন এবং ৫টি কারখানা) বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ ডিলারের মাধ্যমে (প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১ জন ডিলার) কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সরবরাহ করে থাকে।

মন্তব্য করুনঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন